সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, পোলবা: পঞ্চায়েত অফিসে সরকারি কাজ না করে স্বামীর সঙ্গে রোমান্স করার অভিযোগ। এর জেরে দলীয় মহিলা প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল (TMC) পঞায়েত সদস্য ও কর্মীরা । অভিনব এই ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার পোলবা (Polba) এলাকার রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতে। উল্টোদিকে প্রধানের দাবি, "ওরা আমাকে সরাতে চায় তাই এই ধরনের উল্টোপাল্টা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।"


বিক্ষোভকারী পঞ্চায়েত সদস্য ও তৃণমূল কর্মীদের দাবি, রাজহাট পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান রাগ করলে তাঁর স্বামী পঞ্চায়েত অফিসে এসে কখন দই বা আইসক্রিম খাওয়ায়। অফিসেই রোমান্স করে এদিকে তারা কোনও কাজে গেলে পাত্তা দেয় না। পঞ্চায়েতের ২১টা সংসদ রয়েছে। অথচ প্রধান প্রিয়াঙ্কা সুর তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ছাড়া আর কোনও সংসদে কাজ করেন না। পঞ্চদশ আর্থিক প্রকল্পের টাকায় কাজ শুরু হয়েছে কিন্তু দলের পঞ্চায়েত সদস্যরা বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকার উন্নয়ন থমকে আছে। প্রধান দলের লোকের কথা না শুনে অন্যের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছেন।


বুধবার এই বিষয়টির সমাধানের জন্য তৃণমূল সদস্য ও দলীয় কর্মীরা পঞ্চায়েত অফিসে জড়ো হন। শুরু হয় হই হট্টগোল। পঞ্চায়েতের ভিতরেই জয় বাংলা শ্লোগান ওঠে। এর জেরে প্রধান পঞ্চায়েত থেকে বেরিয়ে চলে যান।


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজহাট অঞ্চলের সভাপতি রূপকুমার করের অভিযোগ, "প্রধান মানমানি করছেন। আমাদের কথা শোনেন না। প্রধান কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা করেন না নিজে যা মনে হয় তাই করেন।"


স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সন্দীপ মালাকার একটি ছবি দেখিয়ে অভিযোগ করেন, " প্রধানের স্বামীর সঙ্গে বাড়িতে রাগ অভিমান হলে তিনি সেটা পঞ্চায়েত এসে মেটান। কখনও দই খাইয়ে কখনও আইসক্রিম খাইয়ে রাগ ভাঙায়। পঞ্চায়েতটা কাজের জায়গা সেটাকে রোমান্সের জায়গা বানিয়ে ফেলেছে। আগে আমরা অনেক প্রধান দেখেছি কিন্তু এরকম দেখিনি। আমাদের দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা করেন না। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ওনার বুথে এবারে লোকসভা ভোটে আমরা হেরেছি। উনি বিজেপি হয়ে গিয়েছেন। আমরা চাই প্রধান পদত্যাগ করুক।"


অন্যদিকে রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রিয়াঙ্কা সুর বলেন, "কোনও সমস্যা তৈরি হলে আমি সমাধান করার চেষ্টা করি না এটা যদি বলে থাকে তাহলে মিথ্যা বলছে। পঞ্চায়েতের সদস্যরা পঞ্চায়েতেই আসেন না। পঞ্চায়েতের কাজ এই সবে শুরু হয়েছে। ধাপে ধাপে বিভিন্ন সংসদে কাজ হবে। আমার পঞ্চায়েত লোকসভা ভোটে লিড দিয়েছে। ওরা চাইছে আমাকে কী করে সরানো যায়। তবে আমাকে কেন সরাতে চাইছে সেটা বুঝতে পারছি না। বিধায়কের সঙ্গে সেরকম আদান-প্রদান আমার নেই। যেহেতু উনি আমাকে সমর্থন করেননি, অন্য কাউকে সিলেক্ট করেছিলেন। আমি প্রধান হওয়ার পর একদিন উপপ্রধান  বলল, চলো দই খাই। সেই ছবি তুলে রেখেছিল। আমরা স্বামী-স্ত্রী আমাদের মধ্যে যদি এটা হয়েই থাকে তাহলে বুঝুন ওদের মনোভাবটা।"


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: Death News: স্নান করতে নেমে মর্মান্তিক পরিণতি, কাঁকসায় তলিয়ে মৃত্যু যুবকের