হংসরাজ সিংহ, পুরুলিয়া: ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে খুনের ঘটনায় এক সন্দেহভাজনের স্কেচ প্রকাশ করল পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার এস সিলভা মুরুগান ছবি পোস্ট করে জানান, ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী পোর্ট্রেট আঁকানো হয়েছে। ওই সন্দেহভাজনকে ধরতে পুলিশকে সহযোগিতা করলে তাকে পুরস্কৃত করা হবে। কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে খুনের ঘটনায় তাঁর ভাইপো তৃণমূল কর্মী দীপক কান্দুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


এদিকে, পরিবারের তরফে অভিযোগ তোলা হলেও, ঝালদার IC’র বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপারেশনসের নেতৃত্বে ছ’সদস্যের সিট গঠন করা হল। যদিও, CBI তদন্তের দাবিতে অনড় রয়েছে ঝালদার নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলরের পরিবার।


ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে ঝালদা থানার IC সঞ্জীব ঘোষে’র বিরুদ্ধে! কিন্তু, খুনের ৭২ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরও এখনও অভিযুক্ত IC’র বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। তবে এরইমধ্যে বুধবার ৬ সদস্যের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করা হল। SIT’র নেতৃত্বে থাকবেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপারেশনস। 


কিন্তু, যেখানে খোদ থানার IC’ই অভিযুক্ত, সেখানে রাজ্য পুলিশ দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলের পরিবার! নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু জানিয়েছেন, ''সিবিআই তদন্ত হোক...পুলিশ কিছুই করেনি, পুলিশই তো জড়িত। পুলিশ একদিনও আসেনি, জিজ্ঞাসা করেনি, ঘটনাটা কি হয়েছে? দোষীদের সাপোর্ট করছে। ঝালদা আইসি তো আমার স্বামীকে ধমকি দিয়েছিল। তৃণমূল যোগ দিতে বলেছিল, আমার স্বামী রাজি হয়নি, তাই ধমকি দিয়েছে।''


পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের ঘটনায়, আর কাদের যোগ আছে, ধৃতকে জেরা করে তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। পারিবারিক একটা বিবাদের বিষয় ছিল, তার সঙ্গে আর কী কারণ আছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। এদিন নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলরের বাড়িতে যান CID’র তদন্তকারীরা। কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী ভাইপোকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।



বেবি কান্দু, কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনে অভিযুক্তের মা বেবি কান্দু বলেন, ''দীপক নির্দোষ, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। দীপকের বাবাকেও পুলিশ আটক করে রেখেছে। পারিবারিক কোনও গন্ডগোল ছিল না।''


পুরুলিয়ার কংগ্রেস সভাপতি, নেপাল মাহাতো বলেন, ''আইসি’র বিরুদ্ধে তো কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তাহলে কি করে হবে? ওকে দায়িত্ব থেকে এখনও সরায়নি কেন? CBI তদন্তের দাবি তো ঠিকই।'' ধৃত পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী দীপক কান্দুকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে পুরুলিয়া আদালত।