দীপক ঘোষ, অরিত্রিক ভট্টাচার্য, রাজীব চৌধুরী, কলকাতা: পেট্রোল-ডিজেলের উপর কেন্দ্র শুল্ক কমালেও, এখনও পর্যন্ত সেই পথে হাঁটেনি এ রাজ্যের সরকার। তাই নিয়েই তুঙ্গে রাজনীতি। আগে ৯৭ হাজার কোটি টাকা বকেয়া মেটাক মোদি সরকার। দাবি তুলল তৃণমূল। মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায় না বাংলার সরকার। পাল্টা খোঁচা দিয়েছে বিজেপি।


দিলীপ ঘোষের কথায়, এরা পুরনো গানটাই গেয়ে যাচ্ছে। না কি কেন্দ্র টাকা দিলেই কমাবে। তো আপনারা কী করছেন? পরের ধনে পোদ্দারি করা অভ্যাস। শনিবারই প্রতি লিটার পেট্রোলে ৮ টাকা এবং ডিজেলে ৬ টাকা করে শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে কেন্দ্র। ফলে প্রতি লিটার পেট্রোলে সাড়ে ৯ টাকা এবং ডিজেলে ৭ টাকা দাম কমেছে বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। 


আর এর পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। শনিবারের ঘোষণার পরই পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী ট্যুইটে কটাক্ষ করে বলেন,আমি এই সত্যটি তুলে ধরতে চাই যে, কেন্দ্র দ্বিতীয়বার শুল্ক কমালেও মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং কেরলের মতো রাজ্যগুলিতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির তুলনায় ১০-১৫ টাকা বেশি।


পাল্টা গত দু’বছরে পেট্রোলের দাম তুলে ধরে ট্যুইটারে মোদি সরকারকে নিশানা করেছেন রাহুল গান্ধী। তিনি লেখেন, ২০২০-র পয়লা মে লিটার প্রতি পেট্রোলের দাম ছিল সাড়ে ৬৯ টাকা। গত পয়লা মার্চ ছিল ৯৫ টাকা ৪০ পয়সা পয়লা মে ছিল ১০৫ টাকা ৪০ পয়সা। আর ২২ মে, দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৯৬ টাকা ৭০ পয়সায়। এবার মনে হচ্ছে, আবার আগের মতো প্রতি লিটার পেট্রোলের দামে রোজ ৩০ থেকে ৮০ পয়সা করে ‘বিকাশ’ হবে।  কেন্দ্র জনগণকে বোকা বানানো বন্ধ করুক। সাধারণ মানুষ রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি থেকে প্রকৃতভাবে স্বস্তি পাক।


যদিও কেন্দ্রের ঘোষণার পর শনিবারই, বাম-শাসিত কেরল এবং কংগ্রেস-শাসিত রাজস্থান পেট্রোল-ডিজেলে ভ্যাট কমিয়েছে। রবিবার ভ্যাট কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি বিরোধী শাসিত মহারাষ্ট্র। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও তেমন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। 


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায়, ৪০-৪৫ টাকা বাড়িয়ে ৪-৫টাকা কমানো হল। আই ওয়াশ করা হচ্ছে। বিজেপির রাজ্যগুলি কমায়, কারণ পিছন থেকে সুবিধা দেয় কেন্দ্র, আমাদের রাজ্যের অনেক বকেয়া বাকি। তাই পারছে না।


রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র  শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, কয়েকটি রাজ্য তিন বার কমালেও, এরাজ্যের সরকার একবারও কমায়নি। আসলে তারা রাজনীতি করতে বিরোধিতা করছে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে নয়।


পেট্রোপণ্যের দাম কমাতে কেন্দ্রের এই উদ্যোগকে যথেষ্ট নয় বলে মনে করছে বিরোধীরা। রবিবার ভবানীপুরের যগুবাবুর বাজারে কংগ্রেস ও দুর্গাপুরে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল।