কলকাতা : গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগে যে বাচ্চার জন্ম হয়, তাদেরই প্রিম্যাচিওর বেবি (Premature Baby ) বলা হয়ে থাকে।  জন্ম থেকেই এঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে। হাসপাতালে একটা পর্যায় অবধি চিকিৎসার পরই এই শিশুদের বাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এদের যত্ন নেওয়ার পদ্ধতি কিন্তু পূর্ণ সময়ের পরে জন্মানো বাচ্চাদের থেকে অনেকটা আলাদা। দরকার বিশেষ যত্ন, অনেক বেশি সাবধানতা। বিস্তারিত আলোচনা করছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অগ্নিমিতা গিরি সরকার (Dr. Agnimita Giri Sarkar


কখন প্রিম্যাচিওর শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছা়ড়া হবে -



  • শিশু যখন স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারবে, কোনও যান্ত্রিক সাহায্যের প্রয়োজন হবে না ।

  • শরীর নিজেই স্বাভাবিক তাপমাত্রা ( body temperature) বজায় রাখতে পারবে।

  • নিজে মায়ের স্তন থেকে দুধ টেনে খেতে পারবে

  • ওজন বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক জায়গায় আসবে।

  • কোনওরকম সংক্রমণ বা ইনফেকশনের উপসর্গ থাকবে না। 

    শিশু বাড়িতে আসার পর ভয় কী নিয়ে 

  • Sudden infant death syndrome (SIDS) যাকে  "cot death" ও বলা হয়ে থাকে, এর অর্থ ঘুমের মধ্যে শিশুমৃত্যু। এই ধরনের ঘটনা প্রিম্যাচিওর শিশুর ক্ষেত্রে একটু বেশি ঘটে থাকে তুলনামূলকভাবে। তাই এদের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। 

  • এই শিশুদের উপুর করে না শোয়ানোই ভাল। এতে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতে পারে।

  • চিৎ হয়ে শোওয়ালে বাচ্চার উপর নজর রাখা যেমন সুবিধেজনক তেমনই তার পক্ষেও শ্বাস নেওয়া সুবিধের। 

  • শিশুদের আশে পাশে খেলনা রেখে দেবেন না।

  • ওদের অতিরিক্ত লেপ-কম্বল চাপা দেবেন না মোটেই। এতে শ্বাসে সমস্যা হতে পারে। 

  • মায়ের সঙ্গে একই বিছানায় শোওয়ানোও এড়িয়ে চলা ভাল। একসঙ্গে শুতে গেলে খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চার উপর যেন অতিরিক্ত চাপা না পড়ে যায়। 

  • স্তনপান করান, ফর্মুলা মিল্ক এড়িয়ে চলুন। 

    প্রিম্যাচিওর শিশুদের ক্ষেত্রে কী করা অবশ্য জরুরি - 

  • পাবলিক প্লেসে নিয়ে যাবেন না।

  • বাড়িতে বেশি লোকজনের জমায়েত বন্ধ রাখুন। 

  • বাইরের লোক যেন বাচ্চাকে  কোলে না নেন।

  • প্রয়োজনে বাইরে থেকে এসে ভালভাবে পরিষ্কার হয়ে, অ্যাপ্রন পরে কোলে নিন। 

  • যে কোনওরকম জনবহুল জায়গা এড়িয়ে চলুন। 

  • বাচ্চাকে স্তনপান করান। বাচ্চার সঙ্গে স্কিন-টু-স্কিন কনট্যাক্ট বজায় রাখুন। মায়ের স্তনদান করতে সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞের কাছে ট্রেনিং নিন। 

  • এই সময় বাচ্চার দরকার ক্যাঙ্গারু কেয়ার । অর্থাৎ ক্যাঙ্গারু যেমন শরীরের কাছে সন্তানকে ধরে রাখে, মাকে সেই ভাবে সন্তানকে নিজের শরীরের ওম দিতে হবে। এতে মা ও শিশুর বন্ধন দৃঢ় হয়। এছাড়াও আছে আরও অনেক উপকারিতা। 

    প্রি-ম্যাচিওর শিশুর ক্ষেত্রে ক্যাঙ্গারু কেয়ার কেন জরুরি, আর কী কী চেক আপ করাতে হয় পরবর্তীতে এই নিয়ে শীঘ্রই প্রকাশ পাবে এই বিষয়ে তৃতীয় পর্ব। বিস্তারিত জানতে নজর রাখুন। আর প্রশ্ন পাঠান আমাদের। বিশিষ্ট চিকিৎসকরা করবেন আপনার সমস্যার সমাধান। 



  • ডা. অগ্নিমিতা গিরি সরকার