কলকাতা: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস (Upendranath Bisws) বর্ণিত ‘বাগদার রঞ্জন’কে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ। ‘বাগদার রঞ্জন’কে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এই রঞ্জনের আসল নাম চন্দন মণ্ডল বলে আদালতে জানিয়েছেন মামলাকারীর আইনজীবী। তদন্তে সহযোগিতা না পেলে এবং সিবিআই প্রয়োজন মনে করলে চন্দনকে হেফাজতে নিতে পারবে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গপাধ্যায়।


আগামী ১৫ জুনের মধ্যে সিবিআই-কে এ নিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট (Primart TET)। আদালত জানিয়েছে, শুধুমাত্র রঞ্জনের জন্যেই সিবিআই তদন্ত, সম্পূর্ণ প্রাথমিক দুর্নীতিতে নয়। মামলায় ‘রঞ্জন’-এর সঙ্গে পার্টি করা হয়েছে রাজ্য়ের প্রাক্তন অনগ্রসর এবং শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী উপেনকেও। অবিলম্বে তদন্ত শুরু করতে সিবিআই-কে (CBI) নির্দেশ হাইকোর্টের।


সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে সরব হন উপেন। ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে প্রথম সরব হন তিনি। তাঁর সেই ফেসবুক পোস্ট কোর্টের নজরে আনেন মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। ২০১৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের জন্য যে টেট হয়েছিল (Primary TET Exam), তাতে ৮৬ জন পরীক্ষার্থী পাশ না করেও প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি করছেন বলে অভিযোগ। 



চন্দন মণ্ডলের নাম উল্লেখ না করলেও, জনৈক ‘বাগদার রঞ্জন’-কে এই দুর্নীতির হোতা বলে উল্লেখ করেছিলেন উপেন। সেই সময় উপেন জানান, এক ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে চাকরি বিক্রির বিষয়টি জানতে পারেন তিনি। ২০২১ সালে নিজের ফেসবুক পোস্টে উপেন জানান, জনৈক ‘রঞ্জন’ প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বিক্রি করেন বলে জানতে পেরেছেন তিনি। প্রাথমিকের জন্য ১০ লক্ষ এবং উচ্চ প্রাথমিকের জন্য় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা করে নেন ওই ‘রঞ্জন’। মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য় ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দর উঠেছে।


এই ‘রঞ্জন’ আসলে কে, তা সেই সময় খোলসা করেননি উপেন। কিন্তু ‘রঞ্জন’-এর প্রভাব প্রতিপত্তির কথা বলতে গিয়ে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের এক মন্ত্রীর মৃত্যুর সময় তাঁর বাডি়তে স্বজন-ভোজনের জন্য মাছের দায়িত্ব একাই নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ওই ‘রঞ্জন’। ‘রঞ্জন’-এর বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়, পবিত্র স্থানের পাশ দিয়ে হাঁটছেন বলে লোকজনকে স্বগতোক্তি করতেও দেখেছেন বলে জানান। কারণ ‘রঞ্জন’ অত্যন্ত ‘সৎ’ ব্যক্তি, তাঁকে টাকা দিয়ে কেউ চাকরি পাননি, এমন অভিযোগ নেই বলে জানান উপেন। 


এক সময় সিবিআই-এর প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তা ছিলেন উপেন। সব কিছু জেনেও কেন ‘রঞ্জন’-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি তিনি, প্রশ্ন উঠলে উপেন বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের হয়নি। কোনও মামলায় দোষী সাব্যস্ত হননি তিনি। তাঁরও গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার আছে। সেটাকেই সম্মান জানিয়েছি।’’ মামলার তদন্তে সিবিআই-কে তদন্ত করতে প্রস্তুত বলেও সেই সময় জানিয়েছিলেন উপেন। সিবিআই এখন তাঁর সাহায্য নেয়, কিনা দেখার।