কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি (recruitment scam) মামলার মধ্যেই বেসরকারি প্রশিক্ষণ (private coaching centre) কেন্দ্রগুলিকে বৈঠকে ডাকল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ( West Bengal Board Of Primary Education)। আগামিকাল রাজ্যের ৬৫৬টি বেসরকারি প্রাথমিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকেই ডাকা হয়েছে বলে খবর। মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) গ্রেফতারির পর এমনই এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্ণধারকে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। তার মধ্য়ে এই বৈঠক। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন অনেকেই।
কী হবে আগামিকাল?
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ এই বৈঠক হওয়ার কথা। যা স্থির হয়েছে তাতে প্রত্যেক কেন্দ্রের দুই থেকে চার জন প্রতিনিধি এই বৈঠকে হাজির থাকবেন। পর্ষদের একাংশের বক্তব্য, বিভিন্ন সূত্রে নানা অনিয়ম তাদের চোখে পড়ছিল। সেই অনিয়মগুলিকে ঠিক করতেই এই বৈঠক। সহজ করে বলতে গেলে এই বেসরকারি প্রশিক্ষণগুলিকে নিয়মের বাঁধনে বাঁধতেই বৈঠক ডেকেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। যে কোনও শিক্ষকতা করতে গেলে এই কেন্দ্রগুলিতে প্রশিক্ষণ জরুরি। ফলে রাজ্যজুড়ে প্রচুর প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। বেসরকারি ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে ৬৫৬ টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। পরিকাঠামো থেকে শুরু করে আরও নানা বিষয়ে তারা যাতে নিয়ম মেনে কাজ করেন, সেই সবই আলোচনা হওয়ার কথা আগামিকালের বৈঠকে। তবে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে যা চলছে, তার প্রেক্ষিতে এই বৈঠককে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন অনেকেই।
প্রেক্ষাপট...
হালেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যর ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে তলব করেছে ইডি। আগামী ২০ অক্টোবর সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, তাপসের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত নথিও আনতে বলা হয়েছে। গত কাল তাপসের ছেলে জানিয়েছিলেন, বাবা বাইরে রয়েছেন। তবে ইডি ডাকলে হাজির হবেন। সূত্রের খবর, তাপসের বারাসাতের বাড়িতে প্রায় সাড়ে ৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে দুটি মোবাইল ফোন, একটি হার্ড ডিস্ক, ২টি পেন ড্রাইভ ও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি ও জমির দলিল উদ্ধার হয়। তদন্তকারীদের ধারণা, মোবাইলে গুরুত্বপূর্ণ চ্যাট থাকতে পারে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি, পরীক্ষার জন্য CFSL ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে হার্ড ডিস্ক। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কিছু দিন আগেই গ্রেফতার হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করে ইডি। বয়ানে অসঙ্গতি ও সহযোগিতা না করার অভিযোগ মানিক ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধে, খবর ইডি সূত্রের। তদন্তকারীদের তরফে দাবি, তথ্যপ্রমাণ দেখানোর পরেও তিনি বিভ্রান্ত করছিলেন। তথ্য গোপন করার চেষ্টা করছিলেন। তার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও অভিযুক্তের আইনজীবীদের বক্তব্য, তাঁদের মক্কেলের সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ আছে। তা সত্ত্বেও কীভাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হল ? ইডি-র অফিসাররা অবশ্য এর পাল্টা যুক্তি দেন। জানান, সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ শুধুমাত্র সিবিআইয়ের মামলায় রয়েছে।