রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: গুজরাতের মোরবিতে সেতু দুর্ঘটনায় (Morbi Bridge Collapse) মৃত হাবিবুল শেখের কফিনবন্দি দেহ ফিরল পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বাড়িতে। গুজরাত সরকারের (Gujarat Government) তরফে তরফে সহযোগিতা মেলেনি, ধার করে বিমান ভাড়া মেটাতে হয়েছে বলে দাবি মৃত কিশোরের পরিবারের। এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর (Purba Bardhaman)।
মায়ের চিকিৎসা টাকা জোগাড়ে গুজরাত গিয়েছিল হাবিবুল
ভোটমুখি গুজরাতের মোরবিতে ভয়াবহ সেতু বিপর্যয়। পুরুষ, মহিলা এবং শিশু-সহ শতাধিক মানুষের মৃত্যু। ছিঁড়ে যাওয়া ঝুলন্ত সেতু থেকে মাচ্ছু নদীতে পড়ে গিয়েছিল কাজের জন্য গুজরাতে যাওয়া এ রাজ্যের বাসিন্দা, ১৭ বছরের হাবিবুল শেখ। সেই রাতেই তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
সেই হাবিবুলের কফিনবন্দি দেহ ফিরল পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর কেশববাটির বাড়িতে। গুজরাতের আমদাবাদ থেকে বিমানে প্রথমে কলকাতা পৌঁছয় দেহ। তার পর গাড়িতে দেহ করে নিয়ে যাওয়া হয় পূর্বস্থলীর বাড়িতে।
মোরবিতে সেতু দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারপিছু ৪ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে গুজরাত সরকার। কিন্তু হাবিবুলের পরিবারের দাবি, গুজরাত সরকারের থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও আর্থিক সাহায্য তাঁরা পাননি। ঋণ নিয়ে বিমানে দেহ গুজরাত থেকে কলকাতায় আনতে হয়েছে।
মৃতের কাকা সাইবুল শেখ সংবাদমাধ্যমে বলেন, "গুজরাত সরকার কোনও সাহায্য করেনি। বিমানের ভাড়া দেয়নি. আমরা নিজেরাই নিয়ে এসেছি ধার করে, টাকা জোগাড় করে।"
আরও পড়ুন: Kunal Ghosh: সদ্য বিজেপি ছেড়ে হলদিয়ায় কুণালের সঙ্গে দেখা ২ নেতার, শুভেন্দু-গড়ে ভাঙনের ইঙ্গিত?
সোমবার রাতেই হাবিবুলের বাড়িতে যান পূর্বস্থলী দক্ষিণের বিধায়ক ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি বলেন, "বিজেপি সরকারের গাফিলতিতেই এতবড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল। আমাদের একটা ছেলের মৃত্যু হল।"
মঙ্গলবার সকালে হাবিবুলের বাড়িতে যান তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমানের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, "পরিবারের থেকে জানতে পারলাম, বিমানের ভাড়া দেয়নি। দেহ যেভাবে পাঠিয়েছে, তাতে মৃতকে সম্মান জানানো হয়নি, আমি রাজ্য সরকারকে জানাব যাতে বিমানের খরচ ও অন্যান্য খরচ দেওয়া হয়।"
তবে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে, কাটোয়ায় বিজেপি-র সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, "যদি গুজরাত সরকার বিমানের ভাড়া না দিয়ে থাকে, তাহলে রাজ্য সরকার কেন দেহ নিয়ে এল না ওখান থেকে। মাধ্যমিক পাস ছেলেকে কেন কাজের জন্য গুজরাতে যেতে হয়?"
মোরবি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন বাংলাতেও
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়ের হার্টের অসুখ, চিকিত্সার জন্য টাকা দরকার, তাই মাধ্যমিকের পর পড়া ছেড়ে কাজের জন্য গুজরাতের মোরবিতে গিয়েছিল ১৭ বছরের কিশোর। সেখানে সোনার দোকানে কাজ করতেন হাবিবুলের কাকা। সেই দোকানেই হাবিবুল ১০ মাস আগে কাজ নেয়। তবে মায়ের চিকিত্সার টাকা আর জোগাড় করা হল না। ঘরে ফিরল ছেলের নিথর দেহ।