কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: বিধায়ক তহবিলের টাকা খরচ করে অ্যাম্বুল্যান্স কেনা হয়েছিল। তারপর ১০ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু ব্যবহারই হয়নি সেই অ্যাম্বুল্যান্স। এমনই অভিযোগ খোদ প্রাক্তন বিধায়কের। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের দেবীপুর। মেমারির প্রাক্তন বিধায়ক আবুল হাসেম মন্ডলের অভিযোগ তাঁর বিধায়ক তহবিল থেকে কেনা অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার না করে আদতে সরকারি টাকা নষ্ট করা হয়েছে। ২০১৩ সালে কেনা হয়েছিল ওই অ্য়াম্বুল্যান্স। এখন ২০২৩ সাল।  এই দশ বছরে ওই অ্যাম্বুল্যান্স ১ কিলোমিটারও চলেনি বলে তাঁর অভিযোগ। মেমারির প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়কের দাবি, দলের এক গোষ্ঠীর প্রিয়পাত্র না হওয়ায় ইচ্ছাকৃতভাবে পঞ্চায়েত অফিসে ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে গাড়িটি। সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েতের প্রধান।


জলপাইগুড়ি, কালিয়াগঞ্জের পর মুর্শিদাবাদের সালার। অভিযোগ, মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য কোথাও মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স, কোথাও মেলেনি শববাহী গাড়ি। আবার মুর্শিদাবাদের সালারে উঠেছে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের দাদাগিরিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ। যখন বারবার অমানবিকতার ছবি সামনে আসছে। যখন জরুরি ও জীবনদায়ী যানের পরিষেবা নিয়ে একের পর এক জায়গায় উঠছে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, তখন পূর্ব বর্ধমানে দেবীপুরে ২০১৩ সাল থেকে ১০ বছর ধরে পড়ে আছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স।


কী অভিযোগ প্রাক্তন বিধায়কের:
খোদ প্রাক্তন বিধায়কের অভিযোগ, দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই অ্যাম্বুল্যান্স নষ্ট হচ্ছে পঞ্চায়েত অফিসে। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা।।স্থানীয় সূত্রে খবর, এক দশক আগে আগে বিধায়ক তহবিল থেকে, পঞ্চায়েতকে অ্যাম্বুল্যান্সটি কিনে দেন মেমারির তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক আবুল হাসেম মণ্ডল। তাঁর অভিযোগ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে তা চালানোই হয়নি। মেমারির প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আবুল হাসেম মণ্ডল বলেন, '২০১৩ সালে মেমারির দেবীপুরের বাসিন্দাদের কথা ভেবে বিধায়ক তহবিলের টাকায় দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতকে অ্যাম্বুল্যান্স কিনে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় যাঁরা পঞ্চায়েত চালাতেন তাঁদের কাছে আমি প্রিয়পাত্র ছিলাম না। তাই ইচ্ছাকৃতভাবেই অ্যামবুল্যান্সটি না চালিয়ে ফেলে রাখা হয়। পরে ২০১৮ সালে পঞ্চায়েতে নতুন বোর্ড এলেও আজও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। ১০ বছর হয়ে গেলেও আজও অ্যাম্বুলেন্সটি ১ কিলোমিটারও চালানো হয়নি।'

দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় ক্ষেত্রপাল বলেন, 'অ্যাম্বুল্যান্সটি বিএমওএইচ-কে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে কিন্তু তিনি নিয়ে যাননি।' স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অ্যাম্বুল্যান্সটি চালু থাকলে ভাল হত। কারণ, জরুরি প্রয়োজনে রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়।


এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলকে নিশানা করেছে বিজেপি। শাসক দলের দ্বন্দ্বের কারণে আদতে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের। অবিলম্বে ওই অ্যাাম্বুল্যান্স চালু করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।


আরও পড়ুন: মোবাইল হারিয়েছে? এক ক্লিকেই ব্লক ফোন! খুঁজেও পাবে পুলিশ!