রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) কালনা পুরসভায় (Kalna Municipality) কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগে বিক্ষোভ (agitatioln) দেখালেন চাকরিপ্রার্থী ও অস্থায়ী কর্মীরা। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন শাসকদলের কাউন্সিলরও। যদিও পুর চেয়ারম্যানের দাবি, আদালতের নির্দেশ মেনেই নিয়োগ হয়েছে।
নিয়োগ ‘দুর্নীতিতে’ বিক্ষোভ
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যখন গোটা রাজ্য তোলপাড়, তখন এরইমধ্যে ফের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ। এবার তৃণমূল পরিচালিত কালনা পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগে সরব শাসকদলেরই কাউন্সিলর। চাকরির প্যানেল বাতিলের দাবিতে, শনিবার কালনা পুরসভার গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থী ও অস্থায়ী কর্মীরা।
বিক্ষোভকারীদের বাধায় পুরভবনে ঢুকতে পারেননি চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও কর্মীরা। কালনা পুরসভা সূত্রে খবর, ২০২০ সালের মার্চে কালনা পুরসভা কর্মী নিয়োগের ২০ জনের প্যানেল তৈরি করে, যদিও তা প্রকাশ্যে আনা হয়নি। ২০২২-এ নতুন পুরবোর্ড সিদ্ধান্ত নেয়, ২০২০-র প্যানেল বাতিল করা হবে। RTI করে কয়েকজন জানতে পারেন, তাঁদের নাম প্যানেলে রয়েছে। এরপরই তাঁরা হাইকোর্টে মামলা করেন। প্যানেলভুক্ত ২০ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। শুক্রবার পুরসভার তরফে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়।
তারপরই শুরু হয় বিক্ষোভ। পরীক্ষা দিয়েও যাঁরা নিয়োগপত্র পাননি বলে দাবি, তাঁদের অভিযোগ, তত্কালীন ভাইস চেয়ারম্যান ও এক কাউন্সিলরের আত্মীয়র নাম প্যানেলে রয়েছে। কেন আগের প্যানেল বাতিল করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলেই শুরু হয়েছে বিক্ষোভ।
কালনা পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সন্দীপ বসু বলেন, 'আমরা বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে এই প্যানেল আপাতত স্থগিত রাখা হোক। কারণ এখানে তত্কালীন ভাইস চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরের নাম রয়েছে। আমাদের মনে হচ্ছে যে স্বজনপোষণ হয়েছে।'
কালনা পুরসভার তৃণমূল নেতা ও চেয়ারম্যান আনন্দ দত্ত বলেন, 'হাইকোর্টের নির্দেশমতো নিয়োগ শুরু করেছি। দুর্নীতি হয়েছে কী হয়নি, তা বলতে পারব না।'
নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সরব চাকরিপ্রার্থীরা। কালনা পুরসভার অস্থায়ী কর্মী ও চাকরিপ্রার্থী সমীরকুমার সরকারের বক্তব্য, 'স্বজনপোষণ করে যাঁদের নেওয়া হয়েছে, আমাদের কোয়ালিফিকেশন বেশি থাকা সত্ত্বেও তাঁরা চাকরি পেয়েছেন। পুরসভা যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁরা কমিটির সঙ্গে যুক্ত। বিধায়কের আত্মীয়রা কীভাবে চাকরি পান?'
কালনার তৃণমূল বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগের অবশ্য দাবি, 'নিয়ম মেনেই প্যানেল তৈরি হয়েছে. আদালতের নির্দেশেই তাঁদের নিয়োগ করা হচ্ছে। আমার ভাগ্নেও তো পরীক্ষা দিয়েছিল। সেও তো চাকরি পায়নি।'
এ নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি বিজেপি। কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতির অভিযোগ, তৃণমূলের কাউন্সিলররাই অভিযোগ করছেন, নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। এটাই প্রমাণ যে, চাকরি পেতে, হয় তৃণমূল নেতাদের আত্মীয় হতে হবে বা টাকা দিতে হবে।