কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: এক মাসে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি ৯ শিশুর মৃত্যু বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তাদের প্রত্যেকেরই বয়স ছয় মাসের কম। হাসপাতাল সূত্রে খবর প্রতিদিন গড়ে ৪০জন শিশু ভর্তি হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাড়ানো হচ্ছে বেড।


উত্তরবঙ্গের পর এবার বর্ধমান। উপসর্গ সেই এক। জ্বরের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট আর তাতেই এক মাসে ঝরে গিয়েছে ফুটফুটে ৯ শিশুর প্রাণ। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে একরত্তিদের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ কাটছেই না।


হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃতদের প্রত্যেকের বয়সই ৬ মাসের নীচে। গত এক মাসে একই কারণে ১২০০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। তাদের অর্ধেকেরই বয়স ৬ মাসের নীচে।


বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান কৌস্তুভ নায়েক জানিয়েছেন, সদ্যোজাত শিশুরা সাধারণ ঠান্ডা লাগার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে এবং জটিল আকার ধারণ করছে। যদিও পরিস্থিতি হাতের নাগালেই আছে। ওষুধ অক্সিজেন, বেড পর্যাপ্ত পরিমাণে  রয়েছে।


হাসপাতাল সূত্রে খবর, হাসপাতালে খোলা হয়েছে ৮৫ বেডের Acute Respiratory infection ওয়ার্ড। সেখানে বাড়ানো হচ্ছে আরও ২৫টি বেড। শুক্রবার পর্যন্ত জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১০০ জন। 


এদিকে রাজ্যে করোনা কমার কোনও লক্ষণই নেই। বরং পুজোর পরের পরিসংখ্যান রীতিমত উদ্বেগের। শুক্রবারও রাজ্যের দৈনিক আক্রান্ত ৮০০ এর কোঠায়। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৮৪৬ জন। বৃহস্পতিবার এই সংখা ছিল ৮৬৭। এ নিয়ে রাজ্যে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৫ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪৯২। 


পুজো মিটতেই যেভাবে হু হু বাড়ছে করোনার সংক্রমণ তা নিয়ে সতর্কবার্তা আগেই দিয়েছিল চিকিৎসকেরা। শুধু তাই নয়, চিন্তা বাড়াচ্ছে আরেকটি বিষয়। তা হল করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরও কলকাতায় আক্রান্তের পরিসংখ্যান চিন্তার। শনিবার স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরেই করোনা আক্রান্ত হয়েছে ২৪২ জন। গতকাল কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৬৩ জন। এই সংখ্যা আজ বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকটাই।


বৃহস্পতিবারের থেকে রাজ্যে বেড়েছে মৃত্যুও। বৃহস্পতিবার করোনা থাবায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৯ জন, শুক্রবার সেই সংখ্যা ১২। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনার জেরে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ১৯ হাজার ৩৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৯২ জন। এখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৫৭৭। সুস্থতার হার গতকালের তুলনায় কমে হয়েছে ৯৮.৩২ শতাংশ।