কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: ডোনেশন (Donation) দিতে না পারায় ছাত্রের উচ্চমাধ্যমিকের (HS) রেজিস্ট্রেশন আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের (Purba Burdwan) সরকারি স্কুলের বিরুদ্ধে। ছাত্রের পরিবারের দাবি, অভিযোগ জানাতে গেলে অভব্য আচরণ করেন প্রধান শিক্ষক। থানা ও স্কুল পরিদর্শকের কাছে নালিশ পড়ুয়ার পরিবারের। অভিযোগ অস্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ।


ডোনেশন চাওয়ার অভিযোগ: রেজিস্ট্রেশন ফি-র আড়ালে সরকারি স্কুলে ডোনেশন চাওয়ার অভিযোগ। দিতে না পারায় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশনই আটকে দেওয়া হল। পূর্ব বর্ধমানের সিএমএস হাই স্কুলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছে এক পড়ুয়ার পরিবার। গত মাসের ২৯ তারিখ, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের জন্য নোটিস দেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। রেজিস্ট্রেশন ফি হিসেবে দিতে বলা হয়, ১ হাজার ১৫০ টাকা। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশন ফি হাজারের বেশি হয় কীভাবে? 

অভিভাবকদের দাবি: প্রশ্ন করতেই স্কুল কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে, ১৫০ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি, হাজার টাকা স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ডোনেশন দিতে হবে।


স্কুলের একাদশ শ্রেণির এক পড়ুয়ার মা-এর অভিযোগ, এক হাজার টাকা ডোনেশন দেওয়ার ক্ষমতা নেই বলে জানালে তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন প্রধান শিক্ষক। ঘটনার ভিডিও করতে গেলে পড়ুয়াকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। আটকে দেওয়া হয় রেজস্ট্রেশন। অভিযোগকারী অভিভাবিকার কথায়, প্রধান শিক্ষক জানিয়ে দেন, নামি স্কুলে পড়তে গেলে ডোনেশনের টাকা দিতে হবে। কার্যত আমাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ডোনেশন নেওয়া ও রেজিস্ট্রেশন আটকানোর কথা স্বীকার করলেও অভব্য আচরণ ও মারধরের অভিযোগ মানতে নারাজ প্রধান শিক্ষক।


বর্ধমানের সিএমএস হাই স্কুলের (CMS High School) প্রধান শিক্ষক মিন্টু রায়ের দাবি, ওই ছাত্র শিক্ষকদের সঙ্গে একাধিকবার অভব্য আচরণ করছে। সেই কারণেই ওই ছাত্রের রেজিস্ট্রেশন স্থগিত রাখা হয়েছে। ডোনেশন যাঁরা দিতে পেরেছেন, তাঁদের কাছেই নেওয়া হয়েছে। বাকিদের নেওয়া হয়নি।


পড়ুয়ার পরিবার, বর্ধমান থানা ও জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। ২৬ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রেশনের শেষ তারিখ। তার আগে স্কুল কাউন্সিলের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।


আরও পড়ুন: Birbhum: বাড়িতে বেআইনি কয়লার পাহাড়, অভিযুক্ত পলাতক


নন্দকুমারে ছাত্র-বিক্ষোভ: সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে ছাত্র-বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়ায়। মিড ডে মিলে কারচুপির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে শোকজের প্রতিবাদে স্কুলে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। একাধিক মোটরবাইক ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। 


নন্দকুমারের কড়ক শচীন্দ্র স্মৃতি হাইস্কুলে মিড ডে কারচুপির অভিযোগে আগেই বিডিওর নির্দেশে প্রধান শিক্ষককে শোকজ করে বিদ্যালয় পরিদর্শক। আর তার প্রতিবাদে স্কুলে বিক্ষোভ ছাত্র ছাত্রী থেকে অভিভাবকদের। এমনকি স্কুলে থাকা বেশ কয়েকটি মোটবাইকে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত ছাত্র ছাত্রীরা। ঘটনাস্থলে নন্দকুমার থানার পুলিশ গেলে পুলিশকে ঘিরেও চলে বিক্ষোভ। ছাত্র ছাত্রীদের দাবি, প্রধান শিক্ষক নয়, এই কারচুপির জন্য দায়ি এক অশিক্ষক কর্মী সুকদেব মাইতি। তাকে শাস্তি দিতে হবে। এমনকি ওই অশিক্ষক কর্মীর পরিবার এসে প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকদের হেনস্থা করেছে বলে অভিযোগ। তবে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক কিংবা ওই অশিক্ষক কর্মীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।