রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: অভিযুক্ত ছিলেন স্বামী-স্ত্রী দু-জনেই। তার মধ্যে স্ত্রী আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন। এবার স্বামীকেও গ্রেফতার করা হল। দাদা, বৌদি, মা ও ভাইজিকে খুনের অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছিল পল্লবী ঘোষকে। শুক্রবার ভোরবেলা গ্রেফতার করা হল পল্লবীর স্বামী দেবরাজ ঘোষকে। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল আজ দেবরাজকে। ধৃতকে আজ হাওড়া (Howrah) আদালতে তোলা হয়। 


ঠিক কী অপরাধ অভিযুক্তের?,


পুলিশ সূত্রে খবর হাওড়া থানার এম সি ঘোষ লেনে গত ১০ অগাস্ট রাতে গৃহবধূ পল্লবী ঘোষ তাঁর ভাসুর দেবাশিস ঘোষ, জা রেখা ঘোষ, ভাইজি তিয়াসা ঘোষ এবং শাশুড়ি মাধবী ঘোষকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করেন। পুলিশি তদন্তে উঠে আসে খুনের সময় পল্লবীর স্বামী দেবরাজ ঘোষ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। খুনের পর সেই রাতেই তিনি বাড়ি থেকে চম্পট দেন। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। তাঁর খোঁজে হাওড়া সিটি পুলিশ একটি বিশেষ টিম গঠন করে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আজ ভোরে কাটোয়া স্টেশনের বাইরে থেকে তাকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে পুলিশ।


পুলিশ আগেই জেনেছিল বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর বর্ধমানের বিভিন্ন স্টেশনে সে রাত কাটাচ্ছিল। সেই মতো নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আগেই খুনের মামলা শুরু হয়েছে। ধৃতকে আজ হাওড়া আদালতে তোলা হয় পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য। বিচারক তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। খুনের সময় দেবরাজ সরাসরি স্ত্রী পল্লবীকে কিভাবে সাহায্য করেছিলেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


হাওড়ায় হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড


হাওড়ায় খুনের ঘটনার পর অভিযুক্ত পল্লবী ঘোষের বয়ান অবাক করে দিয়েছিল পুলিশকে। “একাই ৪ জনকে খুন করেছি। প্রত্যেকে মারা গেছে তো?  রাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। রেগে গেলে, নিজেকে মেরে ফেলতে পারি। স্বামীকেও খুন করতে পারি।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, এমন সব কথাই বলছেন হাওড়ায় চার জনকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মূল সদস্য। পুলিশ সূত্রে দাবি-  কখনও কাঁদছেন, কখনও চিৎকার করে এইসব বলে চলেছেন হাওড়ায় পরিবারের ৪ জনকে খুনে অভিযুক্ত পল্লবী ঘোষ (Pallabi Ghosh)। ক্ষোভ থেকেই খুন? না কি নেপথ্যে মানসিক সমস্যা? হাওড়ার এমসি ঘোষ রোডের হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডে এই দুটো বিষয়ই ভাবাচ্ছে পুলিশকে।