কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: গভীর রাতে বাড়িতে ডেকে প্রতিবেশি যুবককে খুনের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়াল রায়না থানার বিদ্যানিধি গ্রামে। পুলিশ সূত্রে খবর, যে যুবকের রহস্যমৃত্যু হয়েছে তাঁর নাম সূরজ মল্লিক। গত ১৭ অগাস্ট অচেতন অবস্থায় বাড়ির পাশ থেকেই উদ্ধার করা হয় সুরজকে। প্রথমে রায়না হাসপাতাল ও পরে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাও করা হয়। কিন্তু তার পরও বাঁচানো যায়নি।


কী ঘটেছিল?
পুলিশ সূত্রে খবর, সূরজের বয়স ২০ বছর। রায়নার বিদ্য়ানিধি গ্রামের শ্যামসুন্দর কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। পড়শিদের একাংশের বক্তব্য, এলাকারই এক নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাঁর। কিন্তু সম্ভবত মেয়ের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না বাবা মোস্তাক। অভিযোগ, গত মঙ্গলবার রাতে সূরজকে ডেকে পাঠান তিনি। তার পর সকালে বাড়ির কাছেই সংজ্ঞাহীন অবস্থায় যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। প্রথমে তাঁকে রায়না স্বাস্থ্য ব্লক ও পরে বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসাও শুরু হয়। কিন্তু তার পরও শেষরক্ষা হয়নি। রবিবার দুপুরে মারা যান যুবক। নিহতের পরিবারের দাবি, বাড়িতে ডেকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছিল তাঁকে। সম্ভবত প্রণয়-সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরেই যুবককে বাড়িতে ডেকে খুন করা হয়েছে, অভিযোগ সূরজের পরিবার ও স্থানীয়দের। এরপর অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। পরিস্থিতি রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পুলিশ গিয়ে এলাকা শান্ত করে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নাবালিকার বাবা মোস্তাক ও মা তুহিনাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে প্রণয়ঘটিত কারণের জেরেই খুন নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। 


খুনের ঘটনা আগেও...
২০১৯ সালের জুলাই মাসে এক ভয়ঙ্কর খুনের ঘটনা হইচই ফেলে দিয়েছিল বর্ধমানে। সে বার কাটোয়ায় স্বামীকে খুনের অভিযোগে স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়। মিষ্টির দোকানের কর্মী সুজিত মণ্ডলকে মৃত অবস্থায় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর স্ত্রী। দাবি করেন স্বামীর হার্টঅ্যাটাক হয়েছে। কিন্তু, মৃতের গলায় আঘাতের চিহ্ন দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপরই জানা যায়, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে সুজিত মণ্ডলকে। মৃতের নাবালিকা মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের দাবি ছিল, মেয়ের গৃহশিক্ষকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে সুজিতের স্ত্রী শম্পার। সম্প্রতি এই সম্পর্কের কথা জেনে যান সুজিত। তার জেরেই প্রথমে স্বামীকে চপের মধ্যে করে ঘুমের ওষুধ দিয়েছিলেন শম্পা। কিন্তু তাতে মৃত্যু না হওয়ায় প্রেমিক নয়ন পালকে বাড়িতে ডাকেন। এরপর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে সুজিতকে খুন করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা টিপেও শ্বাসরোধ করা হয়। পরে জেরাতেও খুনের কথা স্বীকার করেছিলেন অভিযুক্ত, বলে দাবি পুলিশের। অভিযুক্ত গৃহশিক্ষককেও গ্রেফতার করে পুলিশ।


আরও পড়ুন:'শুভেন্দুকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না ?', 'সিবিআই সেটিং' নিয়ে বিস্ফোরক শান্তনু