কমলকৃষ্ণ দে, রায়না : রাস্তাশ্রী-পথশ্রী প্রকল্পে নির্মীয়মাণ রাস্তা (Under-Construction Road) পরিদর্শনে গিয়ে রাস্তার মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন জেলাশাসক। ইঞ্জিনিয়ারের উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। এদিকে তৃণমূলকে (TMC) কাটমানি দেওয়ায় রাস্তার গুণগতমান ঠিক হচ্ছে না বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। 


বৃষ্টিতে উঠে গেছে রাস্তার পিচের প্রলেপ ! কোথাও কোথাও বেরিয়ে পড়েছে মাটি ! এই রাস্তার মান দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ পূর্ব বর্ধমানের (Purba Burdwan) জেলাশাসক। ধমক দিলেন দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ারদের। এরপরই কোদাল দিয়ে রাস্তা খোঁড়ান জেলাশাসক। রাস্তা তৈরির সামগ্রী হাতে নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি !


পূর্ব বর্ধমানের রায়না ২ নং ব্লকে রাস্তাশ্রী-পথশ্রী প্রকল্পে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মীরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রামচন্দ্রপুর কালীতলা পর্যন্ত প্রায় ১.৭ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। রাস্তার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে জেলাশাসককে অভিযোগ জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপরই শনিবার রাস্তা পরিদর্শনে যান জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। সেখানে রাস্তার মান দেখে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। 


রায়নার বাসিন্দা ইনাজুল মল্লিক বলেন, "রাস্তার গুণগত মান খারাপের যে খবর তাঁর কাছে গিয়েছিল তা যে সত্যি, তিনি দেখে গেলেন। উনি বলে গেলেন, রাস্তা আবার নতুন করে খুঁড়ে কাজ হবে। আমরা খুশি। রাস্তাটা যাতে ভালভাবে হয়, আমরা এলাকার লোক সেটাই চাই।" 


জেলাশাসক বলেন, "গ্রামবাসী অভিযোগ জানিয়েছিলেন। গিয়ে দেখলাম, কিছু কিছু জায়গায় কাজের মান খারাপ আছে। ইঞ্জিনিয়ারকে সেগুলো মেরামত করতে বলেছি। তাঁরা কথা দিয়েছেন, করে দেবেন।"

এদিকে হতশ্রী রাস্তা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মানিক রায় বলেন, "ঠিকাদারের কোনও দোষ নেই। নীচ থেকে উপর পর্যন্ত তৃণমূল নেতাদের কাটমানি দিতে দিতে তাঁর কাছে যেটুকু টাকা থাকে সেই টাকাটা থেকে তিনি কাজ করবেন, তার পর তাঁর লাভ হবে।"


তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, "জেলাশাসক যে জিনিস বলেছেন এবং যেটা দেখেছেন, এটা কোথাও কোথাও সত্যি। ঠিকাদাররা এ ধরনের কাজ করছেন। আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে আবেদন করব, সরকার টাকা দিয়ে কাজ করাচ্ছে। অথচ যে ঠিকাদাররা এ ধরনের কাজ করছেন, যাঁরা মানুষের অসুবিধার সৃষ্টি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।"


জেলাশাসক তো পরিদর্শন করলেন। রাস্তা ঠিকভাবে করার নির্দেশও দিলেন। কিন্তু, তা কার্যকর হবে তো? উত্তর দেবে সময়।