নয়াদিল্লি: সূর্যের গা ঘেঁষে যাওয়ার সময় বাঁধল বিপত্তি। সৌরঝড়ের হলকা গায়ে লেগে খোয়া গেল লেজ। সৌরঝড়ে দগ্ধ হল ধূমকেতু নিশিমুরা (Comet Nishimura)। আর মহাজাগতিক সেই মুহূর্ত ধরা পড়ল ক্যামেরায়। সৌরজগতের ঘটনাক্রমের দিকে নজর চালানোর জন্য মহাশূন্যে STEREO-A মহাকাশযান পাঠিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. STEREO-A মহাকাশযানে বসানো ক্যামেরায় ধরা পড়ল সেই দৃশ্য। (Science News)


আমেরিকার নৌ-গবেষণাগারে কর্মরত জ্যোতির্পদার্থবিদ কার্ল বাট্টামস ওই ভিডিও সকলের বোঝার উপযোগী করে সামনে এনেছেন। সূর্য থেকে উৎসারিত সৌরকণার ঢেউকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় করোনাল মাস ইজেকশন বলা হয়। আগ্নেয়গিরি থেকে যেমন অগ্ন্যুৎপাত ঘটে, বেরিয়ে আসে লাভা, তেমনই সূর্যপৃষ্ঠ থেকে ছিটকে আসে সৌরকণা, যার গতিবেগ ঘণ্টায় কয়েক লক্ষ মাইল। ওই সৌরকণাগুলি একত্রিত হয়ে আছড়ে পড়ে ঢেউয়ের আকারে। 


NASA-র তরফে জানা গিয়েছে, সূর্যের কাছ দিয়ে ছুটে যাচ্ছিল ধূমকেতু নিশিমুরা, জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় যা C/2023 P1 নামে পরিচিত। সেই সময় সৌরকণার ঢেউ আছড়ে পড়ে তার গায়ে। তাতে মুহূর্তের মধ্যে ধূমকেতু নিশিমুরার ধড় থেকে আলাদা হয়ে যায় লেজ। প্রযুক্তির দৌলতেই সেই দৃশ্য ধরা পড়ল NASA-র মহাকাশযানের ক্যামেরায়।



আরও পড়ুন: Aditya-L1 Mission: পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত, আরও দূরে সরে গেল সৌরযান Aditya-L1


ধূমকেতু নিশিমুরা যে সূর্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে, গত ১২ অগাস্ট জাপানের জ্যোতির্বিদ হিদেও নিশিমুরাই প্রথম আবিষ্কার করেন। সৌরজগতের বাইরের কোনও বস্তু বলেই প্রথমে ধরা হয়েছিল ধূমকেতু নিশিমুরাকে, ধূমকেতু 21/Borishov-এর ক্ষেত্রে ঠিক এমনটাই ঘটেছিল, যা সূর্যের কাছ দিয়ে সৌরজগতের বাইরে চলে গিয়েছিল। পরে জানা যায়, কুইপার বেল্টের অন্তর্গত বৃত্তাকার বরফাবৃত Oort Cloud-এর অংশ ধূমকেতু নিশিমুরা। প্রত্যেক ৪৩০ বছর অন্তর সৌরজগৎকে অতিক্রম করে সেটি।


গত ১২ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে চলে আসে ধূমকেতু নিশিমুরা, ১২ কোটি ৫০ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্বে। তাতে সূর্যাস্তের ঠিক পর পর, এবং সূর্যোদয়ের ঠিক আগে আকাশে চোঠে পড়ছিল ধূমকেতু নিশিমুরার। সবুজ আলোয় উজ্জ্বল তার দেহ, গ্যাসে পরিপূর্ণ মেঘে থাকা ডিকার্বন এবং ধুলোর জন্যই এমন উজ্জ্বল ওই রং। ধূমকেতু নিশিমুরার দেহটি পাথুরে।