বিটন চক্রবর্তী, খেজুরি : শিশির অধিকারীর (Sisir Adhikari) ভোটে এবার খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির (Khejuri 2 Panchayat Samity) ৯টি স্থায়ী সমিতি দখল করল বিজেপি (BJP)। উন্নয়নের পক্ষে ভোট দেবেন বলে এর আগে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন সাংসদ শিশির অধিকারী। ১৩-১২ ভোটে জয়ী হয়ে স্থায়ী সমিতি দখল করল বিজেপি।


খেজুরি ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ১৫টি। বিজেপি ৯টি ও তৃণমূল ৬টি আসন পায়। পরে বিজেপির ২ সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে, বর্তমানে পঞ্চায়েত সমিতির ৮ সদস্য- ছাড়াও তৃণমূলের পক্ষে ছিলেন ২ জন পঞ্চায়েত প্রধান ও জেলা পরিষদের ২ সদস্য। বিজেপির পক্ষে পঞ্চায়েত সমিতির ৭ সদস্য ছাড়াও ছিলেন ৩ প্রধান, ১ জন জেলা পরিষদ সদস্য ও খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক। শিশির অধিকারীর ভোটে এবার খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির ৯টি স্থায়ী সমিতি দখল করল বিজেপি।


গত ৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনের জন্য নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সেইমতো সকাল থেকে উত্তেজনা ছিল বিডিও অফিস চত্বরে। এক্ষেত্রে ভোট দেন গ্রাম পঞ্চয়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত সদস্য, স্থানীয় বিধায়ক ও সাংসদ। সেই মতো ওইদিন বেলা ১২টা নাগাদ বিডিও অফিসে পৌঁছন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। তখনই শুরু হয়ে যায় ঝামেলা, হয় বোমাবাজি! একে অপরের বিরুদ্ধে ঝামেলা পাকানোর অভিযোগ তোলে তৃণমূল ও বিজেপি। অভিযোগ, এরপর বিডিও অফিসে ভোটাভুটির প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সময় আরেক দফা অশান্তি হয়। এসবের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন খেজুরি ২ নম্বর ব্লকের বিডিও ত্রিভুবন নাথ। যার জেরে পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনের ভোটাভুটি সেদিন স্থগিত রাখা হয়। 


এরপরই খেজুরি থেকে হেঁড়িয়ার রাস্তা ধরে ফিরছিলেন শিশির অধিকারী। মাঝপথে বারাতলার কাছে তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তোলেন খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক। যদিও এই অভিযোগ মানতে চায়নি তৃণমূল।


ঘটনা নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। স্থায়ী সমিতির জন্য শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানায় গেরুয়া শিবির। সেই মোতাবেক হাইকোর্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়। সেইমতো আজ তমলুকে জেলা শাসকের দফতরে স্থায়ী সমিতির ভোট হয়। ভোট দিতে যাওয়ার আগে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন শিশির অধিকারী। পরে বেরিয়েও ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন।


তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করছে, শিশির অধিকারী যেহেতু এখনও কাগজে-কলমে তাদের সাংসদ তাই তাঁর ভোট পাবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, শিশির অধিকারী বিজেপির পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। ফলে, এই ৯টি স্থায়ী সমিতির দখল নিল বিজেপি। যদিও শিশির অধিকারীর বক্তব্য, তৃণমূলের তরফে কোনও হুইপ ছিল না। ফলে, উন্নয়ন যাঁরা করবেন, তাঁদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।