বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সিপিএমের। আর সেই কাজে তৃণমূলকে সাহায্য করলেন তৃণমূলেরই কিছু সদস্য। এমনই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বিষ্ণুবাড় ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত প্রধান।  আর এই ঘটনায় শুরু হয়েছে চাপানউতোর।   


দলের প্রধানের বিরুদ্ধেই অনাস্থা:
দলের অন্দরে টানাপড়েন কমাতে বারবার বার্তা দিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের প্রধান, উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা রুখতে কড়া বার্তা দেওয়ার কথা বলেছে দল। তারপরেও সেই ছবি দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায়। দিন কয়েক আগে, নন্দীগ্রামের দাউদপুরে এমনই অনাস্থার জেরে সরতে হয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই সঞ্চালককে। এবার তৃণমূল সদস্যের সমর্থনে তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধেই অনাস্থা নিয়ে এল সিপিএম। চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনা ঘটেছে তমলুকের বিষ্ণুবাড় ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে।


কোন অঙ্কে অনাস্থা:
এই গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট সদস্য সংখ্যা ১১। তৃণমূলের সদস্য ৬ জন, সিপিএমের ৪ জন এবং বাম সমর্থিত নির্দল রয়েছেন ১ জন। তৃণমূল বোর্ড গঠন করলে প্রধান নির্বাচিত হন কৃষ্ণা মাইতি ও উপপ্রধান হন অনিমেষ প্রামানিক। কিন্তু গত বছর জুলাইতে সিপিএম ও বাম সমর্থিত নির্দলের সমর্থনে উপপ্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় অনিমেষ প্রামানিককে। এবার সেই অনিমেষ প্রামানিক ও বাম সমর্থিত নির্দল সহ আরও চার সিপিএম সদস্যের সমর্থনে প্রধানের বিরুদ্ধে তমলুক উন্নয়ন ব্লকের বিডিওর কাছে জমা পড়েছে অনাস্থা প্রস্তাব। অনিমেষ প্রামানিক জানাচ্ছেন,  প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রতিবাদ করে কোনও কাজ না হওয়ায় বিরোধীদের সমর্থনে অনাস্থা নিয়ে আসা হয়েছে। 


পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাস বলেন, 'তৃণমূলের ওই প্রধানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে,  সাধারণ মানুষও ক্ষুব্ধ। তাই তৃণমূলেরও যাঁরা ক্ষুব্ধ তাঁরা আমাদের সর্মথন করে লুঠেরাদের বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়েছেন।' তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান। বিষ্ণুবাড় ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অভিযুক্ত প্রধান কৃষ্ণা মাইতি বলেন, 'অভিযোগ ভিত্তিহীন। অনাস্থার বিষয়ে জানি না।' তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তুষার মন্ডল বলেন, 'বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।  ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশ নিয়ে ব্যস্ত আছি।' তমলুক উন্নয়ন ব্লকের বিডিও জানিয়েছেন, অনাস্থা প্রস্তাবের আবেদনে একটি চিঠি পেয়েছি। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরও পড়ুন: ৭ থেকে ৮ বার রেকি করেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রবেশ ধৃত হাফিজুলের, তদন্তে নয়া তথ্য