শুভেন্দু ভট্টাচার্য, মাথাভাঙা: বিধানসভা নির্বাচনের (WB Assembly Election 2021) পর থেকে ঘর ছাড়া, পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভিন রাজ্যে। এবার ঘরে ফিরছে চেয়ে ভিডিও বার্তা মাথাভাঙার নয়ারহাটের বিজেপির (BJP) প্রাক্তন বুথ সভাপতি বিপিন বর্মনের।


ঘরে ফিরতে চেয়ে ভিডিও বার্তা শীতলকুচির ঘরছাড়া বিজেপি নেতা বিপিন বর্মনের অভিযোগ, “আমার বাড়ি তৃণমূলের লোকজন ভাঙচুর করে। তখন থেকে আমি বাড়ি ছাড়া আছি। আজ পর্যন্ত পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ি ফিরতে পারিনি এবং পশ্চিমবঙ্গের বাইরে আছি, শ্রমিকের কাজ করছি।’’ ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহারের শীতলকুচিতে, বিজেপি প্রার্থীর কাউন্টিং এজেন্ট ছিলেন এই বিপিন বর্মন। কিন্তু, আজ তিনিই ঘরছাড়া হয়ে সপরিবারে রয়েছেন ওড়িশায়। দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতে হচ্ছে বিজেপির প্রাক্তন বুথ সভাপতিকে। ভিনরাজ্য থেকেই এবার ঘরে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করে ভিডিও বার্তা দিলেন তিনি।


আদতে শীতলকুচির নয়ারহাটের বাসিন্দা বিপিন বর্মন। কিন্তু, অভিযোগ ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হওয়ায় রাজ্য ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তাঁর ঘরবাড়িও তৃণমূল ভেঙে দিয়েছে বলে অভিযোগ। শীতলকুচির ঘরছাড়া বিজেপি নেতা বিপিন বর্মনের কথায়, “পুলিশ-প্রশাসনের তরফে কোনও সাহায্য না পাওয়ায় আমি আজ পর্যন্ত বাড়ি ঢুকতে পারছি না এবং তৃণমূলের হুমকি এবং সন্ত্রাসের কারণে স্ত্রী-সহ বাচ্চাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছি না। আমি চাই, আমার যে কেন্দ্রীয় সংস্থা দ্বারা তদন্ত হোক এবং আমাকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক।’’


বিধানসভা নির্বাচনে শীতলকুচিতে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী বরেনচন্দ্র বর্মন। কিন্তু তাঁর কাউন্টিং এজেন্টের অভিযোগ, ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হয়েছেন তিনি। এমনকী তৃণমূলের দায়ের করা মামলায় তাঁকে মাস দুয়েক জেলও খাটতে হয়েছে। কিন্তু জামিন পেয়েও রেহাই মেলেনি। গত মে মাসে, তৃণমূলের লোকজন তাঁর বাড়ি ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। যদিও তা মানতে রাজি নয় রাজ্যের শাসকদল। নয়ারহাটের আরেক বিজেপি নেতা অমল বর্মনের কথায়, “ওর বাড়ি ভাঙচুর করেছে, মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছে, এখন বাইরের রাজ্যেই পরিবার নিয়ে আছে, তৃণমূলের ভয়ে আসতে পারছে না। প্রশাসনকে জানাব, বিষয়টি দেখার জন্য।’’ মাথাভাঙা ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মহেন্দ্র বর্মন বলেন, “তৃণমূল এধরনের রাজনীতি করে না। কারণ নয়ারহাটে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি তৃণমূলের কর্মীদের মারধর করেছে। কিন্তু নির্বাচনের পরে, সেসব বিজেপি কর্মী এলাকাতেই রয়েছে, তৃণমূল হামলা করেনি। বিপীন বর্মন বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত। পুলিশের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছে।’’ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত করছে CBI ও রাজ্য সরকারের সিট। শীতলকুচির বিজেপি নেতাকে রাজ্যে ফেরাতে প্রশাসন কি কোনও উদ্যোগ নেবে? সেটাই এখন দেখার।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ৭ থেকে ৮ বার রেকি করেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রবেশ ধৃত হাফিজুলের, তদন্তে নয়া তথ্য