বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের (Three Tier Panchayat Board) বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শুরু করে দিল পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur) জেলা প্রশাসন। সোমবার থেকেই সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সচিবদের চিঠি পাঠানো শুরু হয়। তবে স্থানীয়দের বড় অংশের বক্তব্য, এই জেলার অন্তত ২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলাফল ত্রিশঙ্কু (Hung)। সেক্ষেত্রে সেখানে কী ভাবে পঞ্চায়েত গঠন হবে, তা দেখার বিষয়।


কী পরিস্থিতি?
পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল ব্লকের অমৃতবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনাই উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক। সেখানে মোট আসন ১৮। তৃণমূল ও বিজেপি ৮টি করে আসন পেলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা কেউ পায়নি। সিপিএম ২টি আসন জিতেছে সেখানে। অর্থাৎ পঞ্চায়েত গঠনে সেখানে নির্ণায়ক শক্তি হতে পারে সিপিএম। অন্যদিকে নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের আমদাবাদ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১৫ আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৭টি আসন। তৃণমূল পায় ৫টি আসন। সিপিএমের ঝুলিতে গিয়েছে ১টি ও নির্দল জিতেছে ২ আসনে। এমন অবস্থায় তৃণমূল নির্দলের সমর্থন পেয়ে গেলে সিপিএম এখানেও নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠতে পারে। তমলুকের বিষ্ণুবাড় ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে আবার মোট আসন আবার ১৪। সেখানে তৃণমূল পায় ৩টি আসন, বিজেপি জেতে ৫টি আসনে। সিপিএমের ঝুলিতে গিয়েছে ৩টি আসন ও অন্যান্যরা পায় ৩টি আসন। অর্থাৎ যে-ই পঞ্চায়েত গড়ুক, নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে সিপিএম ও অন্যান্যরা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বস্তুত, পূর্ব মেদিনীপুরে আরও বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ফলাফলের সমীকরণ এমনই যেখানে সিপিএম বোর্ড গঠনে বড় ভূমিকা নিতে পারে। তবে সিপিএম জেলা নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল কিংবা বিজেপিকে তারা সমর্থন করবেন না। অন্য দিকে তৃণমূল নেতৃত্বর বক্তব্য, বিজেপি বাদ দিয়ে যে কোনও দলের সমর্থন তারা নিতে পারে। তবে শর্ত একটাই। তাদের তৃণমূলে আসতে হবে। বিজেপির আবার দাবি, তৃণমূল বাদ দিয়ে অন্য যে কেউ তাদের কাছে স্বাগত। এমন অবস্থায় কী ভাবে পঞ্চায়েত গড়া হবে, সেদিকে তাকিয়ে অনেকেই। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর থেকে শাসকদলের বিরুদ্ধে জোর করে জয়ী বিরোধী প্রার্থীদের নানা ভাবে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। তালিকায় সংযোজন মথুরাপুর।


মথুরাপুরের ঘটনা...
অপহরণের অভিযোগ ওঠার দু’দিনের মাথায়, বাড়ি ফিরে বিস্ফোরক দাবি করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চার বিরোধী প্রার্থী। তৃণমূল এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ভয় দেখানো ও চাপ দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তাঁরা।  বিরোধী প্রার্থীদের দাবি, ২৫ জুলাই রাতে, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তৃণমূলের দুষকৃতীরাই ভাড়াবাড়ি থেকে তাঁদের তুলে নিয়ে যায়। রাখা হয় গেস্ট হাউসে। পরদিন আরও একটি গোপন ডেরায় নিয়ে গিয়ে চাপ দিয়ে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেয় তৃণমূলের লোকজন। জোর করে ভিডিয়ো বার্তায় অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করতে বাধ্য করে। এর মধ্যেই সেখানে হাজির হয় পুলিশের ১৪-১৫ জনের একটি দল। পুলিশও নিজের মতো বয়ান লিখিয়ে সই করিয়ে নেয়। এমনই দাবি মথুরাপুরের চার বিরোধী প্রার্থীর। 


আরও পড়ুন:বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর 'শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি, সংক্রমণ কমেছে অর্ধেকেরও বেশি'