এগরা : এগরায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের (Egra Blast) ঘটনায় FIR দায়ের করল পুলিশ। বাজি কারখানার মালিক ভানু বাগের (Bhanu Bag) বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। গতকালই পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) পুলিশ সুপার অমরনাথ কে জানিয়েছিলেন, এই ভানু বাগকে আগেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে জামিন পান তিনি। স্থানীয়দের দাবি, বাজি কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগ, তৃণমূলের (TMC) প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য। গতকালই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে CID। আজ ঘটনাস্থলে যাবে ফরেন্সিক টিম।


রাস্তায় পড়ে পোড়া মৃতদেহ। জলে ভাসছে দগ্ধ মৃতদেহ। গাছে, ঝোপে ঝাড়ে ছড়িয়ে ছড়িয়ে আছে পোড়া দেহাংশ ! চতুর্দিকে আধপোড়া মানুষের গোঁঙানির শব্দ ! স্থানীয়রা বলছেন, এ যেন শ্মশানভূমি ! কার্যত মৃত্যুপুরী এগরার খাদিকুল গ্রাম। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ অন্তত ৯ জনের মৃত্য়ু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও কয়েকজন। গ্রামজুড়ে শুধুই স্বজনহারাদের আর্তনাদ। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন বাসিন্দারা।


পুলিশের দাবি, অবৈধ বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরেই মৃত্য়ু হয়েছে। কিন্তু, স্থানীয়দের একাংশ থেকে বিরোধী সকলেরই দাবি, বাজি কারখানার আড়ালে বোমা বাধা হচ্ছিল। স্থানীয়রা জানান, পুকুরের পাশেই একটি বাড়িতে ছিল ২ টি ঘর। সেখানেই ছিল বেআইনি বাজি কারখানা। এই বাড়ির একটি ঘরেই বিস্ফোরণ হয়। দেহ ছিটকে গিয়ে পড়ে পুকুরে।


এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগ। তাঁর প্রসঙ্গে গতকালই মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, যিনি বাজির কারখানা চালাচ্ছিলেন, তাঁকে গত বছরের অক্টোবর মাসেও পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। পুলিশ সুপারও বলছেন, ওখানে দু-তিন সপ্তাহ আগে রেড করা হয়েছে। তারপরও প্রকাশ্যে এই অবৈধ কারবার কীভাবে চলল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের কেউ কেউ বলছেন, পুলিশ নাকি সবই জানত। 


আগেও একাধিকবার বিস্ফোরণ হয় ভানু বাগের বাজি কারখানায়। ১৯৯৫ সালে প্রথমবার বিস্ফোরণ হয় ভানুর বাজি কারখানায়। সেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় ৫ জনের। ২০০১ সালে ফের বিস্ফোরণ হয় ভানু বাগের বাজি কারখানায়। মৃত্যু হয় ভানুর ভাই বাগ-সহ ৩ জনের। ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সাহারা অঞ্চলের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন ভানু।


আরও পড়ুন ; 'ভগবান বাংলাকে বাঁচান', এগরায় মৃতদেহ লোপাটের অভিযোগ শুভেন্দুর, আজই যাচ্ছেন ঘটনাস্থলে