ঋত্বিক প্রধান, দিঘা : লক্ষ লক্ষ টাকা দরের তেলিয়া ভোলা মাছ উঠল দিঘায়। একটা-দু'টো নয়, একসঙ্গে ৯টি মাছ। প্রায় ৩১ হাজার টাকা কেজি দরে চলছে বিক্রিবাঁটোয়ারা। এক একটি মাছের ওজন প্রায় ২৫-৩০ কেজি। ওড়িশার ধামরা থেকে এক মৎস্য ব্যবসায়ী এদিন দিঘা মোহনায় মাছগুলি নিয়ে আসেন। মাছগুলি পৌঁছানোর পর রীতিমতো হিড়িক পড়ে যায় দিঘা মোহনায়।
গভীর সমুদ্রে পাওয়া যায় এই মাছ। মাছের পটকা ও অন্যান্য অঙ্গ জীবনদায়ী ওষুধ তৈরির কাজে লাগে। এছাড়া মাছগুলি বিদেশেও রফতানি করা হয়। দিঘার জি-কে ডি আড়তে এই মাছের নিলাম চলছে। মন্দার বাজারে এই ধরনের মাছ পেয়ে বেজায় খুশি মৎস্যজীবীরা। তেলিয়া ভোলাগুলি দেখতে যেমন ভিড় জমিয়েছেন মৎস্যজীবীরা, তেমনি ভিড় জমিয়েছেন দিঘার পর্যটকরাও। ইতিপূর্বে দিঘায় তেলিয়া ভোলার দেখা মিললেও, এত পরিমাণ দর-ওজন এর আগে দেখা যায়নি।
গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসেও উঠেছিল তেলিয়া ভোলা মাছ। বঙ্গোপসাগরে মৎস্যজীবীদের জালে উঠে আসে শতাধিক তেলিয়া ভোলা মাছ। ডায়মন্ড হারবার নগেন্দ্র বাজার আড়তে ১১৪টি তেলিয়া ভোলা মাছ বিক্রি হয় ৫০ লক্ষের বেশি টাকায়। একসঙ্গে এত সংখ্যক মাছ পেয়ে খুশি হয়ে পড়েন ক্রেতা থেকে বিক্রেতারা।
মাছগুলির ওজন ছিল সর্বনিম্ন ১০ কেজি থেকে সর্বাধিক ৪০ কেজি পর্যন্ত। তবে এর থেকে কিছু ছোট মাছও ছিল। সেগুলিরও ওজন নেহাত কম ছিল না। বাকি সমস্ত মাছের ওজন ছিল ১০ থেকে ২০ কেজির মধ্যে। কেজি প্রতি তেলিয়া ভোলা মাছের পাইকারি দাম উঠেছিল প্রায় দু'হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা পর্যন্ত। কাকদ্বীপের এফবি গিরিবালা নামক একটি ট্রলার গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য জাল ফেললে এই তেলিয়া ভোলা মাছ উঠে আসে।
এরপর বিক্রির জন্য ১১৪টি মাছ নিয়ে আসা হয়েছিল ডায়মন্ড হারবার নগেন্দ্র বাজার আড়তে। রাতে মৎস্যআড়ত থেকে মাছগুলো পাইকারি দরে বিক্রি হয়। আড়তের কর্মীদের দাবি, এই মাছ বিদেশে রফতানি করা হয়। এমনকি এই ভোলা মাছের পটকা থেকে জীবনদায়ী ওষুধ তৈরি হওয়ার কারণে এই মাছের দাম এত বেশি। মৎস্যজীবীদের কথায়, এই মাছ মূলত মাঝ সমুদ্রে পাওয়া যায়। এর পটকা থেকে তৈরি হয় ক্যাপসুলের খাপ ও পেট থেকে একটি সুতো পাওয়া যায়। যে সুতো অপারেশনের পর সেলাই করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই মাছ মূলত জাপান ও থাইল্যান্ডে রফতানি করা হয়।