বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: আদালতের নির্দেশে হলদিয়া বন্দরের জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়ল পুলিশ। বাসিন্দাদের প্রশ্ন,বন্দরের জমিতে অনেকে বসবাস করলেও শুধুমাত্র ১১টি ঘর ভাঙা হচ্ছে কেন? রাজনৈতিক চক্রান্ত দেখছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। আদালতের নির্দেশেই জমি খালি করা হয়েছে। কোনও চক্রান্ত বা উদ্দেশ্য নেই, দাবি বন্দর কর্তৃপক্ষের। (Haldia News)


বন্দর সূত্রে খবর, হলদিয়া পুরসভার ২৮নং ওয়ার্ডের চকতাড়োয়ান এলাকায় তাদের জমি জবরদখল করে থাকা ১১টি বাড়ি চিহ্নিত করা হয় আগেই। নোটিস দেওয়ার পাশাপাশি, এলাকা দখলমুক্ত করতে প্রচারও করা হয়। কিন্তু বাসিন্দারা বাড়ি খালি না করায় এদিন এলাকায় যায় পুলিশ। পে লোডার দিয়ে বাড়ি ভাঙতে গেলে বাধা দেন এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশের সঙ্গে শুরু হয় বচসা। (Purba Medinipur News)


পুলিশের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ শুরু হয় স্থানীয়দের।  পুলিশের উদ্দেশে স্থানীয় এক বাসিন্দা প্রশ্ন ছোড়েন, 'আমি বলছি, এটা কী জন্য ভাঙা হচ্ছে?' জবাবে হলদিয়া থানার আইসি সুকোমল ঘোষ বলেন, "অর্ডার আছে তাই।" এতদিন ধরে বসবাসকারী মানুষজন কোথায় যাবেন, প্রশ্ন তোলেন স্থানীয় বাসিন্দা। জবাবে সুকোমল জানান, যা বলার আদালতে গিয়ে আইনজীবী মারফত জানাতে হবে। 


আরও পড়ুন: West Bengal Assembly: মাঝে ৩০ ফুটের ব্যবধান, বিধানসভা চত্বরে রণংদেহি TMC-BJP, মাঝে ঢাল হয়ে দাঁড়াল লালবাজার


সেখানেই থামেনি বাদানুবাদ। পেলোডার দিয়ে বাড়ি ভাঙতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দেন। গায়ের জোরে পুলিশ বাড়ি ভাঙছে বলে অভিযোগ করেন এক স্থানীয় বাসিন্দা।  এর জবাবে পুলিশ জানায়, আদালতের অর্ডার নিয়ে আসা হয়েছে। গায়ের জোরে কিছু হচ্ছে না। চকতাড়োয়ানের বাসিন্দা অলোক মণ্ডল অভিযোগ করেন, "সব বাড়ি ভাঙা হচ্ছে না। বেছে বেছে ভাঙা হচ্ছে। চক্রান্ত হচ্ছে। তৃণমূল করি বলে আমাদের বাড়ি ভাঙা হচ্ছে।" শঙ্করী দোলই নামের আর এক বাসিন্দা বলেন, "সরালে হবে না। বিকল্প ব্যবস্থা করে দিতে হবে।"


শেষ পর্যন্ত কোনও বাধা-বিপত্তিই খাটেনি যদিও। শীতের মুখে নিরাশ্রয় হল ১১টি পরিবার। বাক্স-প্যাঁটরা বেঁধে নিয়ে ছেড়ে দিতে হয় ঘর। চালের টালি খুলে নিয়ে যেতে হয় কাউকে কাউকে। কেটে দেওয়া হয় বিদ্যুতের লাইনও। আদালতের নির্দেশে হলদিয়া বন্দরের জমি দখলমুক্ত করে বিরাট পুলিশ বাহিনী। বন্দর সূত্রে খবর, হলদিয়া পুরসভার ২৮নং ওয়ার্ডের চকতাড়োয়ান এলাকায় তাদের জমি জবরদখল করে থাকা ১১টি বাড়ি চিহ্নিত করা হয় আগেই। নোটিস দেওয়ার পাশাপাশি, এলাকা দখলমুক্ত করতে প্রচারও করা হয়। কিন্তু বাসিন্দারা বাড়ি খালি না করায়, এদিন এলাকায় যায় পুলিশ।


বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বন্দরের জায়গায় অনেকে জবরদখল করে ছিলেন। প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। হাইকোর্টের নির্দেশেই এদিন উচ্ছেদ করা হয়েছে। ঘটনার পিছনে কোনও চক্রান্ত বা অন্য উদ্দেশ্য নেই। এই ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।