কলকাতা: অমিত শাহের সভা ঘিরে আগে থেকেই পারদ ছিল তুঙ্গে। বুধবার দুপুরে শহর কলকাতার বুকে, রাজ্য বিধানসভা চত্বরের উত্তেজনা চরমে উঠল। বিধানসভা চত্বরে বেনজির ভাবে সংঘাতে জড়াল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল এবং প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। সাসপেন্ড হওয়ার পর আচমকাই বিধানসভায় এদিন প্রবেশ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে 'চোর, চোর' ধ্বনি দিতে শুরু করেন তিনি। এর পাল্টা, তৃণমূলের তরফেও শুভেন্দুকে লক্ষ্য করে 'চোর, চোর' রব ওঠে। (West Bengal Assembly)


বুধবার ধর্মতলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভা শেষ হওয়ার কিছু ক্ষণ পরই, আচমকা বিধানসভায় ঢুকতে দেখা যায় শুভেন্দুকে। চিৎকার করে 'চোর, চোর, মমতা চোর। চাকরি চোর মমতা, ডিএ চোর মমতা' বলতে থাকেন তিনি। তাঁর সঙ্গে থাকা বিজেপি-র অন্যরা রব তোলেন, "চোর ধরো, জেল ভরো"। তাতে মুহূর্তের মধ্যে তেতে ওঠে বিধানসভা চত্বরের পরিস্থিতি। (Mamata Banerjee-Suvendu Adhikari)


বিধানসভায় চত্বরে শুভেন্দু যখন এই ধ্বনি তুলছেন, সেই সময় অম্বেডকর মূর্তির সামনে ধর্নায় তৃণমূলের বিধায়করা। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য চাপ বাড়াতে কালো পোশাকে অম্বেডকর মূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সকলে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন খোদ মমতাও। বিধানসভা চত্বরে শুভেন্দু হইচই শুরু করার পর সেখান থেকেও 'বিজেপি-র সবাই চোর' ধ্বনি উঠতে শুরু করে। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘DA দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক, আপত্তি থাকলে...’, বললেন মমতা


পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে মাটিতে বসে পড়েন শুভেন্দু। সেখান থেকে ৩০ ফুটের দূরত্বে সুর চড়়াতে শুরু করেন তৃণমূলের বিধায়করাও। ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় লালবাজারের স্পেশাল ফোর্স। তৃণমূল এবং বিজেপি-র মাঝখানে কার্যত ঢাল হয়ে দাঁড়ায় তারা। এই পরিস্থিতিতে উত্তাপ বেড়ে চলে ক্রমশ। এর আগে রাজ্য বিধানসভায় এমন পরিস্থিতি কবে দেখা দিয়েছিল, তা স্মরণ করতে পারছেন না কেউই।


অম্বেডকর মূর্তির পাদদেশ থেকে ধর্না শেষ করে বেরনোর সময় এ নিয়ে মুখ খোলেন মমতা। বলেন, "বিধানসভায় অসভ্যতা করছে।  স্পিকারকে ব্যবস্থা নিতে বলব। আমাকে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ দেখিয়ে লাভ নেই। সারাজীবন লুঠ করেছে। গদ্দারদের আমাদের কেউ ভয় পায় না। কেউ কোনও কর্মসূচি নিলে আমরা কেউ বাধা দিই না।" এদিন দুপুরে বিধানসভায় নাম না করে বিজেপি-কে আক্রমণ করেছিলেন মমতা। তার পরই শাহের সভা শেষ হতে বিধানসভা চত্বরে ঢুকে পড়েন শুভেন্দু, গতকালই তাঁকে সাসপেন্ড করেছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।