খেজুরি : দিনকয়েক আগেই এরাজ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালুর মঞ্চে জয় শ্রীরাম স্লোগন ঘিরে বিতর্ক বেঁধেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে ভেসে আসে জয় শ্রীরাম স্লোগান। যে পরিস্থিতিতে দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নির্ধারিত মঞ্চে না গিয়ে সরে যান অন্যত্র। এনিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে দিনকয়েক কম জলঘোলা হয়নি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার কুণাল ঘোষকে (Kunal Ghosh) দেখে উঠল জয় শ্রীরাম স্লোগান (Jai Sriram Slogan)। খেজুরিতে (Khejuri) কুণালকে লক্ষ্য করে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়া হয়। পাল্টা এগিয়ে যান তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকও। স্লোগান দিতে হলে সামনে এসে দিন বলে হুঙ্কার ছাড়েন।
পরে কুণাল বলেন, "অত ভিড়ের মধ্যে এক শতাংশ-দুই শতাংশ নিশ্চয়ই ছিল অন্য দিলের। খেলার মাঠ। থাকতেই পারেন। তাঁদের দু'-একজন অন্য একটি স্লোগান দিচ্ছিলেন। আমরা জয় বাংলা বলছি। ওরা জয়... একটি কিছু বলেছেন। একজনকে দেখলাম, আমি যত এগিয়ে যাচ্ছি, তিনি একটু পিছিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। আমি বললাম, ভাই এগিয়ে আসুন। স্লোগান দিন। তারপর হ্যান্ডশেক করে বললাম, নতুন বছর আপনার ভাল কাটুক। আরও বললাম, যাঁরা অন্য স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁরা মনে করে রাজ্য সরকারের, দিদির সব স্কিম কিন্তু করে নেবেন। যাতে আপনারা দিদির সুরক্ষা কবচের মধ্যে থাকতে পারেন। তাই শুনে তাঁরাও খুশি হয়েছেন।"
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের দৌড় শুরু আগেই হাওড়া স্টেশনে কাটে অনুষ্ঠানের তাল। হাওড়া স্টেশনের ২২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দেখতে সামনে পৌঁছলেও, উল্টোদিকের প্ল্যাটফর্ম থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই ভেসে আসে জয় শ্রীরাম স্লোগান। বিজেপি পতাকা দেখিয়ে ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিক থেকে উড়ে আসে জয় শ্রীরাম স্লোগান। যে পরিস্থিতিতে দৃশ্যই ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নির্ধারিত মঞ্চে না গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন ট্রেনের সামনেই। গোটা পরিস্থিতি দেখে সঙ্গে সঙ্গে মঞ্চ থেকে নেমে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে আসেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি এসে মুখ্যমন্ত্রীকে শান্ত করার চেষ্টা করার পাশাপাশি উল্টোদিকের প্ল্যাটফর্মে থাকা ব্যক্তিদের শান্ত থাকার বার্তা দেন।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের মতোই বিজেপির সাংসদ সুভাষ সরকার। তিনি হাত নেড়ে বোঝানোর পাশাপাশি মঞ্চে উঠে সংযত হওয়ার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রীকে যারা স্লোগান দেন তাঁদের উদ্দেশে। ঘটনা দেখে এগিয়ে আসেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যায় তাঁর কাছে ক্ষোভপ্রকাশ করে ঘটনা বলতে। রাজ্যপালও রেলমন্ত্রীর সঙ্গে তারপর বোঝাতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। রাজনৈতিক সৌজন্যের পরিচয় দিয়েই মঞ্চ ছেড়ে নিচে নেমে আসেন বিজেপির একাধিক নেতা-মন্ত্রীরা। শুভেন্দু অধিকারী, জন বার্লা ও নিশীথ প্রামাণিক ছাড়া সকলেই এসে রেলমন্ত্রী ও রাজ্যপালের সঙ্গে বোঝাতে শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। যদিও তাতেও বরফ গলেনি। শেষপর্যন্ত মঞ্চের পাশে সরাকরি আমলাদের পাশেই বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।