বিটন চক্রবর্তী, নন্দকুমার : আদালতের নির্দেশে আজ নন্দকুমারের (Nandakumar) পশ্চিম শীতলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ফের বোর্ড গঠন । নন্দকুমার পঞ্চায়েত সমিতির প্রেক্ষাগৃহে হবে এই কাজ। এই মর্মে পঞ্চায়েতের সব সদস্যকে চিঠি পাঠিয়েছেন নন্দকুমারের বিডিও । আর এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে একযোগে আক্রমণ শানিয়েছে বাম-বিজেপি নেতৃত্ব। পালটা জবাব দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল।


গত ১১ অগাস্ট নন্দকুমারের পশ্চিম শীতলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন ও বোর্ড গঠন ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর থেকে পুলিশের লাঠিচার্জ বাদ যায়নি কিছুই। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ২৩টি। পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলের নিরিখে তৃণমূল পায় ১১টি, বিজেপি পায় ৫টি এবং সিপিএম ও নির্দল মিলিয়ে পায় ৭টি আসন।
কিন্তু, তৃণমূলকে ঠেকাতে নন্দকুমারের সমবায় মডেলের মতো এখানেও বাম-বিজেপি জোট করে প্রধান নির্বাচন, বোর্ড গঠনের প্রস্তুতি শুরু করে  বিরোধী শিবির। কিন্তু প্রধান নির্বাচনের আগেই প্রধান পদপ্রার্থী শেখ জব্বর আলি নামে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্যকে পুলিশ পুরনো একটি মামলায় গ্রেফতার করে।


এর প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশের একের পর এক গাড়ি ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। পালটা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। প্রতিবাদে এই বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া থেকে বাম বিজেপি সহ নির্দল সদস্যরা নিজেরা সরে দাঁড়ান। একতরফাভাবে তৃণমূল প্রধান, উপপ্রধান নির্বাচন হয়। সেইসময় এই ঘটনার প্রতিবাদ করে বাম-বিজেপি জোটের পাশে দাঁড়ান শুভেন্দু অধিকারী। পরবর্তীকালে বামেরা এই ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়।


গত ১৮ অক্টোবর হাইকোর্ট এই বোর্ডকে অবৈধ ঘোষণা করে প্রধানকে অপসারণের নির্দেশ দেয় এবং ৬ সপ্তাহের মধ্যে নতুন প্রধান নির্বাচন করে বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেইমতো ২৯ নভেম্বর ৬ সপ্তাহের মেয়াদ শেষের আগের দিন ২৮ নভেম্বর এই গ্রাম পঞ্চায়েতে নতুন করে বোর্ড গঠনের দিন ধার্য করা হয়েছে।


প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েতে ভোটগ্রহণের পর দিনও উত্তপ্ত ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার (Panchayat Election Violence)। ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈর হয় সেখানে। ব্যালট বাক্স লুঠের অভিযোগে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি (BJP)। আগুন জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। পথ অবরোধ করা হয়। লাঠিচার্জ করে ভিড় ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। 


পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার ব্লকে স্ট্রংরুমে ব্যালট বক্স ভেঙে কারচুপির অভিযোগ ওঠে। প্রতিবাদে নন্দকুমারের শ্রীকৃষ্ণপুরে আগুন জ্বালিয়ে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। বাঁশ দিয়ে ঘিরে, সিমেন্টের খুঁটি ফেলে রাস্তা আটকানো হয়। রাস্তার ধারে নির্বাচনী ক্যাম্পেও ভাঙচুর চালান বিজেপি কর্মীরা।