বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: নিজের দোতলা বাড়ি রয়েছে। আবাস যোজনার উপভোক্তা তালিকায় তাঁর নাম থাকার কথাই নয়। কিন্তু তিনিও পেয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকায় দু’-দু’টি দোকানঘর বানিয়ে ফেলেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা। এই ঘটনায় বিডিও-র (BDO) কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। চাপের মুখে পড়ে আবাস যোজনার টাকায় দোকানঘর তৈরির কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শাসক-নেতা।
বাড়ি লাগোয়া দু’-দু’টি দোকানঘর। সেই দোকানগুলির গায়ে লাগানো রয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ফলক। ওই দোকানে পশুখাদ্যের গুদাম তৈরি করেছেন তৃণমূল (TMC) নেতা। অভিযোগ, এই দোকানঘর তৈরি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকায়। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ব্লকের নুরাই গ্রামের বাসিন্দা হরিশচন্দ্র প্রামাণিক। তিনি তৃণমূলের কিষাণ-খেতমজুর সেলের ব্লক সভাপতি ও হাউর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য। অভিযোগ, নিজের দোতলা পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও প্রভাব খাটিয়ে একই অর্থবর্ষে নিজের ও বাবার নামে আলাদা আলাদাভাবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা নিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য। সেই টাকায় তৈরি করেছেন ২টি দোকানঘর। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই ব্যক্তি প্রভাব খাটিয় যোজনার টাকা নিলেও গ্রামের প্রকৃত প্রাপকরা বঞ্চিত হয়েছেন।
অভিযোগকারী এক গ্রামবাসী ভূপাল দাস বলেন, 'হরিশচন্দ্র প্রামাণিকের দোতলা পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও, প্রভাব খাটিয়ে আবাসের টাকা নিয়েছেন। বাবার নামেও নিয়েছেন। দোকানঘর বানিয়ে পশুখাদ্যের ব্যবসা করছেন।'
এই বিতর্ক শুরু হতেই সাফাই দিয়েছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা। তৃণমূল কংগ্রেসের কিষাণ খেতমজুর সংগঠনের ব্লক সভাপতি হরিশচন্দ্র প্রামাণিক বলেন, 'আমি তো থাকছি। ইনকাম করব কার থেকে। চুরি করব নাকি। করে খেতে হবে, বাড়িও করেছি, ব্যবসাও করছি।' এই ঘটনায় শাসকদলকে নিশানা করেছে বিজেপি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সদস্য ও বিজেপি নেতা অলক দলুই বলেন, 'এখনও বহু মানুষ ত্রিপল-ছাউনিতে থাকছেন। এই সমস্ত জন প্রতিনিধিরা গরিবের প্রাপ্য লুটেছে। নিজের স্বার্থ গুছিয়েছে।' এই ঘটনায় পাঁশকুড়া তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুজিত রায় বলেন, 'খোঁজ নিতে হবে। আবাস পাওয়া অন্যায় নয়। বিজেপি নেতাও ঘর পেয়েছেন।' তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বিডিও-কে চিঠি দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে ব্লক প্রশাসন।