পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার আদ্রায় তৃণমূলের টাউন সভাপতি খুনের ঘটনায়, মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এক কংগ্রেস প্রার্থী-সহ এই নিয়ে তিনজন গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল নিতুরিয়া থানা এলাকা থেকে, খুনের মাস্টারমাইন্ড আরজু মালিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি বিহারের জামুইয়ের বাসিন্দা। তাঁর কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুটি গুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ২২ জুন, ভিড়ে ঠাসা আদ্রা বাজারে তৃণমূলের কার্যালয়ের বাইরে বসে ছিলেন দলের টাউন সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে। তখনই বাইকে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করে খুন করে। গুলি লাগে তাঁর দেহরক্ষীরও। ওই ঘটনায় আগেই গ্রাম পঞ্চায়েতের এক কংগ্রেস প্রার্থী-সহ ২জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এবার ধরা পড়ল মাস্টারমাইন্ড। ধৃতকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে রঘুনাথপুর মহকুমা আদালত।


পঞ্চায়েত ভোটের মুখে, পার্টি অফিসের সামনেই খুন হয়ে যান আদ্রা টাউন তৃণমূলের সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান ছিল, খুনের জন্য সুপারি কিলার লাগানো হয়েছিল। 


ভরা বাজার, চতুর্দিক সিসিটিভিতে মোড়া! তার মধ্য়েই, বৃহস্পতিবার ভর সন্ধেয় আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন আদ্রার টাউন তৃণমূল সভাপতি। যেদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে রিপোর্টে, পুলিশ জানায়, মনোনয়ন পর্বে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেদিনই, আদতে, সংখ্য়াটা বেড়ে দাঁড়াল ৯ -এ। তাও মাত্র ১৪ দিনে। ঘটনায় শুক্রবার, গ্রেফতার করা হল কংগ্রেসের এক প্রার্থী-সহ ২ জনকে। ঝালদা থেকে আদ্রা, ব্যবধান ৬২ কিলোমিটার। গতবছরের মার্চে পুরবোর্ড গঠনের আগে পুরুলিয়ার ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয়। আর পঞ্চায়েত ভোটের মুখে, পার্টি অফিসের সামনেই খুন হয়ে গেলেন আদ্রা টাউন তৃণমূলের সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে। 


ঘটনাস্থল আদ্রা থানা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে। আদ্রা স্টেশন থেকে দূরত্ব আরও কম! মাত্র দেড় কিলোমিটার। খুনের ঘটনায় পুরুলিয়ার ডেকো গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রার্থী আরশাদ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে মহম্মদ জামাল নামে আরও এক ব্য়ক্তিকে। ভর সন্ধেয় ভিড়ে ঠাসা আদ্রা বাজারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন! প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মোটরবাইক ফেলে চম্পট দেয় ৩ জন আততায়ী। 


ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে ঝাড়খণ্ড বর্ডার। কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের সময়ও এই ঝাড়খণ্ডের দিকেই আততায়ীদের পালানোর সম্ভাবনার কথা উঠে আসে। ঘটনাস্থল অর্থাৎ তৃণমূলের পার্টি অফিস থেকে ১০০ মিটারের মধ্য়েই চৌমাথা রাস্তা রয়েছে। তার মধ্য়ে রঘুনাথপুর ও পাঁচুডাঙার রাস্তা দিয়ে ঝাড়খণ্ড, বোকারো, ধানবাদের দিকে যাওয়া যায়। পার্টি অফিসের ডানদিকের রাস্তা দিয়েও, রঘুনাথপুর হয়ে ঝাড়খণ্ডে যাওয়া যায়। 


প্রশ্ন উঠেছিল কোন পথে পালাল আততায়ীরা? রেলপথে না কি সড়কপথে? খুনের পর মোটরবাইক সেখানেই ফেলে যায়।  তাহলে কি কাছেপিঠেই কোনও গাড়ি অপেক্ষা করছিল আততায়ীদের জন্য? দলীয় নেতা খুনের ঘটনার প্রতিবাদে আদ্রা স্টেশন রোডে সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করা হয়।