সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার গাড়াফুসরোতে ডাইনি অপবাদে এক মহিলাকে খুনের হুমকির অভিযোগ উঠল তাঁর প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। পুরুলিয়া মফস্বল থানায় চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন মহিলা। অভিযোগ অস্বীকার অভিযুক্ত পরিবারের। এই কুসংস্কার দূর করতে আরও প্রচার দরকার, বলছেন যুক্তিবাদীরা।


বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুরস পুরুলিয়া, একের পর এক জেলায় ডাইনি সন্দেহে মারধরের অভিযোগ। সচেতনতামূলক প্রচারেও দূর হচ্ছে না অন্ধকার। বিজ্ঞান এগোচ্ছে, কিন্তু মানুষের মন থেকে এখনও কুসংস্কারের মেঘ কাটেনি। সে কথা আরও একবার প্রমাণ করল পুরুলিয়ার গাড়াফুসরো গ্রামের ঘটনা। ডাইনি অপবাদে বছর সত্তরের এক মহিলাকে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে।


স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রামের এক মহিলা মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। এর কারণ হিসেবে ৭০ বছরের প্রতিবেশী মহিলাকে সন্দেহ করে অসুস্থ মহিলার পরিবার। অভিযোগ, সেই কারণে খুনের হুমকিও দেওয় হয় ৭০ বছরের ওই মহিলাকে। যদিও অভিযুক্ত পরিবার হুমকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।


যুক্তিবাদীরা বলছেন, ডাইনি বলে কিছু হয় না। সবই কুসস্কার। সমাজ থেকে এই অন্ধ বিশ্বাস দূর করতে আরো সচেতন করতে হবে সাধারণ মানুষকে। 


ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পুরুলিয়া শাখার সম্পাদক মধুসূদন মাহাতো বলেছেন, ‘জেলায় কুসংস্কার একটি বড় সমস্যা। গ্রামের কোনও ব্যক্তি বা শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লেই সেই গ্রামের বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের দায়ী করা হয়। এর বিরুদ্ধে প্রচার প্রয়োজন।’


কয়েকদিন আগেই পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর ব্লকের সাতগেড়িয়া এলাকায় ডাইনি অপবাদে আদিবাসী মহিলাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। আক্রান্তের পরিবারের দাবি, এলাকার কয়েকজন বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। বছর পঞ্চাশের মহিলাকে তাঁদের অসুস্থতার জন্য দায়ী করে ডাইনি অপবাদ দেওয়া হয়। এরপরই বাড়িতে চড়াও হয়ে মহিলাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম মহিলাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 


এই ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেও, ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই ধরনের ঘটনা আটকাতে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আদিবাসীদের সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল।