সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: লুঠ, ডাকাতি রুখতে এবার আরও সতর্ক পুরুলিয়া (Purulia) জেলা পুলিশ (West bengal Police)। জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা। তাতে ব্যাঙ্ক ও শোরুমগুলিতে সিসি ক্যামেরা ও অ্যালার্ম রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সকলের মোবাইল ফোনে থানা ও পুলিশ কন্ট্রোল রুমের নম্বর রাখার কথাও বলা হয়েছে।  


দুই জেলায় একই সংস্থার গয়নার শোরুমে একই সময়ে ডাকাতি


 দিন কয়েক আগে পুরুলিয়া ও নদিয়ার এই ছবি ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যজুড়ে।  সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার নতুন নির্দেশিকা জারি করল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে যেকোনও বড় সংস্থার শোরুমে থানা ও পুলিশ কন্ট্রোল রুমের নম্বর রাখতে হবে। কর্মচারীদের মোবাইলে সহায় অ্যাপ রাখতে হবে। পুরুলিয়া জেলা পুলিশের উদ্যোগে তৈরি এই অ্যাপে ক্লিক করলেই লোকেশন পৌঁছে যাবে পুলিশের কাছে। 


মোবাইল ফোনে SOS-এর সুবিধা রাখতে হবে। সিসি ক্যামেরায় হার্ড ডিস্কের পাশাপাশি ডিভিআর-এ আলাদা করে ফুটেজ রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাতে হার্ড ডিস্ক খোয়া গেলেও ফুটেজ পেতে সমস্যা না হয়। শোরুমে অ্যালার্ম ও সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী রাখতে হবে। সিসি ক্যামেরা ও অ্যালার্ম ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা নির্দিষ্ট সময় অন্তর খতিয়ে দেখতে হবে।


কোনও ক্রেতাকে দেখে সন্দেহ হলেই থানায় খবর দিতে হবে। নিয়োগের সময় কর্মচারীদের পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করে নিতে হবে। শোরুম ও ব্যাঙ্কে ভিজিটরস বুক অবশ্যই রাখতে হবে। পুরুলিয়ায় সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মাস্টারমাইন্ডের খোঁজ এখনও মেলেনি। 


পুরুলিয়ার ডাকাতির ব্লুপ্রিন্ট


 উল্লেখ্য, জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ায় সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের শোরুমে ডাকাতির ছক কষা হয়েছিল জেলে বসে। ধৃতদের জেরা করে এই তথ্য মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরুলিয়া থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ঝাড়খণ্ডে মিলিত হয় ডাকাতরা। সেখান থেকেই ২৯ অগাস্ট, দুুপুরে তারা পুরুলিয়া শহরের নামোপাড়ায় গয়নার শোরুমে হানা দেয়। ৯ দিন আগে ২০ অগাস্ট থেকে পুরুলিয়ায় রেকি শুরু করে ডাকাতরা। এরপর ফাইনাল অপারেশনের দিন প্রায় ৮ কোটি টাকার সোনা, হিরের গহনা এবং শোরুমের সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক নিয়ে চম্পট দেয় ৭ জনের ডাকাতদল। এই ঘটনায় ৬ সেপ্টেম্বর দিল্লি থেকে বিকাশ কুমার নামে এক দুষকৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের বাড়ি বিহারের নালন্দায়। এরপর গতকাল করমজিৎ সিং সিধু নামে আরও এক ডাকাতকে ঝাড়খণ্ডের সুদামডি থেকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের বাড়ি ঝাড়খণ্ডেই। বাকিদের খোঁজ চলছে।