অর্ণব মুখোপাধ্যায়, পুরুলিয়া: ঝালদার নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর, তপন কান্দুর (Tapan Kandu Murder) ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই ছিল অসঙ্গতি! সিবিআই (CBI) সূত্রে এমনই দাবি করা হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকও ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। এই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, এই ভুল সিটের নজরে আসেনি কেন?


ময়নাতদন্তের রিপোর্টে গলদ থাকার অভিযোগ


ঝালদাকাণ্ডের (Jhalda Murder Case) তদন্তে এবার নতুন তথ্য। নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলরের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অসঙ্গতি ছিল বলে অভিযোগ। ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর, তপন কান্দুর খুনের তদন্তভার, সিটের থেকে নিয়ে সিবিআইকে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে দাবি, তদন্তে নামার পর প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের সঙ্গে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কিছুতেই মিলছিল না। 


১৩ মার্চ তপন কান্দুকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালিয়ে খুন করা হয়। একটি গুলি তাঁর পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়, আরেকটি মাথা ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। সিবিআই সূত্রে দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীরা বয়ান অনুযায়ী, কংগ্রেস কাউন্সিলরকে যেদিক থেকে গুলি করা হয়, তাতে গুলি ডানদিক দিয়ে ঢুকে বাঁ দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়, গুলি বাঁ দিক দিয়ে ঢুকে ডান দিকে দিয়ে বেরিয়েছে। 


এতেই তদন্তে বিভ্রান্তি তৈরি হয়, যে তাহলে ঠিক কোনটা? শেষে বুধবার দিন এই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে সিবিআই। কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের কয়েক মহূর্ত আগের একটা সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যে সামনে এসেছে। 


আরও পড়ুন: South 24 Parganas News: বাড়ির বারান্দাতেই তৈরি হচ্ছে বন্দুক, কুলতলিতে বেআইনি অস্তর কারখানার পর্দাফাঁস


সিবিআই সূত্রে দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, খুনের সময় তপন কান্দু বাঘমুন্ডির দিক থেকে ঝালদার দিকে ফিরছিলেন।  রাস্তার ধারে ছিলেন যাদব রজক নামে তপন কান্দুর এক বন্ধু। কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু ছিলেন রাস্তার ভিতরের দিকে। উল্টোদিক থেকে বাইকে চড়ে এসে, রাস্তার মাঝখান থেকে আততায়ীরা গুলি চালায়। সেক্ষেত্রে গুলি শরীরের ডানদিক দিয়ে ঢুকে বাঁদিক দিয়ে বেরোনোর কথা। অথচ সিবিআই সূত্রে দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, গুলি বাঁদিক থেকে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়েছে, যা কোনও মতেই সম্ভব নয়। 


শেষে রাঁচির রিমস হাসপাতালের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসককে ডেকে পাঠানো হয়। সিবিআই সূত্রে দাবি, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক স্বীকার করে নেন, যে তাঁর ভুল হয়েছে।  এর পর তাঁকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সংশোধন করতে বলা হয়।


সিটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন


সিবিআই সূত্রে দাবি, এই ভুল সামনে আসার পর যে বিষয়টা তাঁদের ভাবাচ্ছে, তা হল, এত বড় একটা ভুল রাজ্য পুলিশের সিটের নজর এড়িয়ে গেল কীভাবে?  তদন্তের শুরুতেই যে বিষয়টা নজরে আসার কথা, তা কারও নজরে পড়ল না কেন? পুলিশ তাহলে কী তদন্ত করছিল?


নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলরের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর বক্তব্য, "এতদিন পুলিশ কী করছিল? তাই তো সিবিআইয়ের ওপর ভরসা করেছি।" কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের সিবিআই তদন্তে আগামী দিনে আর কী তথ্য উঠে আসে, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।