সুকান্ত দাস, হিন্দোল দে ও সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কুলতলি: দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) কুলতলিতে বেআইনি অস্ত্র কারখানায় পুলিশের হানা (Illegal Weapons Recovered)। উদ্ধার ওয়ান শর্টার থেকে দো-নলা বন্দুক, কার্তুজ, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, অস্ত্র তৈরির আওয়াজ ঢাকতে বাজানো হত বক্স, পুলিশের গতিবিধি জানতে মোড়ে মোড়ে মোতায়েন করা হয়েছিল মহিলাদের। 


বাড়ি বারান্দায় প্রকাশ্যেই অস্ত্র তৈরি!


বারুইপুর পুলিশের গোপন অভিযানে অস্ত্র পাচার চক্রের পর্দাফাঁস হল কুলতলিতে (Kultali News)। পানিহাটি, বগটুইয়ের পর রাজ্যে বেআইনি ভাবে মজুত করে রাখা অস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার পর থেকেও, বেহালায় সিন্ডিকেট চক্রের মধ্যে ঝামেলা , বাঁশদ্রোণীতে দিনের বেলায় গুলি চলার ঘটনার ঘটেছে। তাতে একটাই প্রশ্ন উঠছে, এত অস্ত্র আসছে কোথা থেকে? মুড়ি-মুড়কির মতো অস্ত্র পাচ্ছে কী ভাবে? কাদের মদতে অস্ত্রের কারবার চলছে? অস্ত্র ভিন্ রাজ্য থেকে আমদানি করা হচ্ছে, ন কি রাজ্যের মধ্যেই সক্রিয় অস্ত্র তৈরির কারখানা (Illegal Arms Factory)? 


সেই আবহেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে হদিশ মিলল বেআইনি অস্ত্র কারখানার। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির আন্ধারিয়া গ্রামে অভিযান চালায় বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ এবং কুলতলি থানার পুলিশ। গ্রামেরই একটি বাড়িতে মেলে অস্ত্র কারখানা। 


আরও পড়ুন: Kolkata Chit Fund Scam Busted : কলকাতায় আরও এক চিটফান্ডের পর্দাফাঁস, ২ হাজার কোটি টাকা প্রতারণায় অভিযুক্ত গ্রেফতার


পুলিশের দাবি, বাড়ির বারান্দায় একেবারে প্রকাশ্যেই চলছিল অস্ত্র তৈরির কাজ। বাড়ি মালিক ও বেআইনি অস্ত্র পাচারচক্রের পান্ডা মহিউদ্দিন সর্দারকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে, ৮টি ওয়ান শর্টার, ৩টি লং ব্যারেল অর্থাত্‍ দোনলা বন্দুক, ২টি খালি এবং ১টি ভর্তি কার্তুজ, প্রচুর অস্ত্র তৈরির যন্ত্রাংশ এবং কাঁচামাল। 
(ভিস- পুলিশ অস্ত্র তুলছে এরকম ছবি আছে মার্ক করে দেখাতে হবে)


বারুইপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার ইন্দরজিৎ বসু  জানিয়েছেন, পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত মহিউদ্দিনের আগে পোলট্রি ফার্ম ছিল। ৬-৭ মাস আগে ব্যবসা বন্ধ করে দেন। ২০১৯ সালে একটি খুনের মামলায় গ্রেফতারও হন মহিউদ্দিন। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর বেশ কিছুদিন বিহারে ছিলেন। তার পর থেকেই অস্ত্র তৈরির কাজে হাত পাকাতে শুরু করেন। 


অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ


পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি ২০টি ওয়ান শর্টারের বরাত পান মহিউদ্দিন।  ১২টি আগেই সরবার করেছেন অভিযুক্ত।  বাকি ৮টিই পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে।  কিন্তু বাড়ির বারান্দায় এতদিন ধরে অস্ত্র তৈরির কাজ হলেও, কেন টের পেলেন না স্থানীয় বাসিন্দারা? 

পুলিশের দাবি, বেশ আটঘাট বেধেই এ কাজে নেমেছিলেন মহিউদ্দিন। সূত্রের খবর, অস্ত্র তৈরির সময় যাতে আওয়াজ বাইরে না যায়, তার জন্য বাড়িতে বাজানো হত সাউন্ড বক্স। পুলিশ যদি কখনও হানা দেয়, তারজন্যও পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন ধুরন্ধর মহিউদ্দিন। সূত্রের খবর, গ্রামে ঢোকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে মহিলাদের বসিয়ে রাখতেন মহিউদ্দিন। এর জন্য তাঁদের টাকা দেওয়া হত। পরিবর্তে ওই মহিলারা পুলিশের গতিবিধি দেখলেই মহিউদ্দিনকে খবর দিতেন। মহিউদ্দিনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের হাত থেকে সেই মহিলারাই ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ।