সন্দীপ সরকার, সনত ঝা , পূর্ণেন্দু সিংহ, কলকাতা : অনশনকারীদের পরিবারের সদস্যদের ওপর চাপ তৈরির চেষ্টার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ধর্মতলায় অনশনকারী জুনিয়ার ডাক্তারের বাঁকুড়ার বাড়িতে সপ্তমীর মধ্যরাতে পৌঁছে যায় পুলিশ। অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে অনশনরত ভিনরাজ্যের এক জুনিয়র ডাক্তারের বাড়িতে ফোন করে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও দুটি ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
আর জি কর-কাণ্ডের বিচার-সহ ১০-দফা দাবিতে শনিবার থেকে ধর্মতলায় অনশন করছেন সাতজন জুনিয়র ডাক্তার। শুক্রবার তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন আরও দু'জন জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতীকী অনশন করছেন সিনিয়র চিকিৎসকরাও। সমর্থনের বার্তা দিতে প্রতিদিন হাজির হচ্ছেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। অনশন চলছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেও।
এরই মধ্যে এবার অনশনকারীদের পরিবারের ওপর চাপ তৈরির চেষ্টার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসক, অনশনরত স্নিগ্ধা হাজরার বাড়ি বাঁকুড়ার প্রতাপবাগান এলাকায়। অভিযোগ, সপ্তমীর গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যায় পুলিশ। সোশাল মিডিয়ায় এই ছবি ভাইরাল হয়েছে। প্রতিবেশীর দাবি, শুক্রবার অষ্টমীর সকালেও তাঁর বাড়িতে পুলিশ আসে। অয়ন মিদ্দা জানান, 'আওয়াজ শুনে বেরিয়ে আসি। এসে দেখি পুলিশের গাড়ি এবং বাইকে কিছু লোকজন, তাঁরা দাঁড়িয়ে আছে। দেখি যে স্নিগ্ধাদের বাড়ির গেটের সামনে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। আজকে সকালে আবার পুলিশ আসে।'
আন্দোলনকারী চিকিৎসক , দেবাশিস হালদার, যিনি স্নিগ্ধার জীবনসঙ্গীও বটে, জানালেন, আসলে ওনারা ভয় পাচ্ছেন । তাই চাপ দিচ্ছে, যাতে অনশন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, অনশনের জেরে স্নিগ্ধা হাজরা অসুস্থ হয়ে পড়লেও হাসপাতালে ভর্তি হতে চাইছিলেন না। সেইজন্য পুলিশ তাঁর পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ করতে গেছিল যে, তাঁরা যেন স্নিগ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। এরকম একটা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণেই পুলিশ অত রাতে স্নিগ্ধা হাজরার বাড়িতে গেছিল। কিন্তু পরিবারের লোকেরা পুলিশের সঙ্গে দেখা করেননি। এমনকী ফোনে যোগাযোগ করা হলেও পরিবার কোনও সাড়া দেয়নি।
ধর্মতলার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে যে দু'জন জুনিয়র ডাক্তার অনশন করছেন তার মধ্য়ে রয়েছেন উত্তরপ্রদেশের লখনওয়ের বাসিন্দা আলোক ভার্মা। অভিযোগ, লখনওয়ে তাঁর বাড়িতে ফোন করে অনশন তোলার জন্য চাপ দিচ্ছে মাটিগাড়া থানার পুলিশ। কী বলেছে পুলিশ ? অনশনরত চিকিৎসক জানান,' বলেছে যে, অনেক বেশি শরীর খারাপ হয়ে গেছে, আপনি জানেন না। ওকে বারণ করুন। চাপ তৈরি করা হচ্ছে। ভাল করেই বলছে যে শরীর খারাপ হয়ে গেলে কী হবে...এরকম। ' যদিও, মাটিগাড়া থানার তরফে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।