ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চালু হচ্ছে জলাতঙ্ক নির্ণায়ক কেন্দ্র। বিহার, ঝাড়খণ্ড, সিকিমের মতো প্রতিবেশী রাজ্য থেকে নমুনা এলেও এখানে পরীক্ষা করার ব্যবস্থা থাকছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে এই কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে।


জলাতঙ্ক চিহ্নিত করার জন্য এতদিন ব্যাঙ্গালোরে যেতে হত, এবার থেকে তা কলকাতায় হবে। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে যে জলাতঙ্ক নির্ণায়ক কেন্দ্র চালু হচ্ছে, তার পোশাকি নাম রিজিওনাল ল্যাবরেটরি ফর র‍্যাবিস ডায়াগনসিস। বিভিন্ন পশুর কামড়ে আক্রান্তদের নমুনা, এখন ব্যাঙ্গালোরে পাঠানো হয়।


স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত বছরের ডিসেম্বরে ১ হাজার ৯৬৫টি নমুনা জলাতঙ্কের পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল ব্যাঙ্গালোরে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সেই সংখ্যাটা ছিল ১ হাজার ৯২৩। এতে দ্রুত রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব হয় না। সেই সমস্যা দূর করতেই বেলেঘাটা আইডিতে তৈরি হচ্ছে জলাতঙ্ক নির্ণায়ক কেন্দ্র।


কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই কেন্দ্রের কাজ শেষ পর্যায়ে। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের অধ্যক্ষ অনিমা হালদার বলেন, জলাতঙ্ক নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসক ও কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিল্লিতে চলছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এনসিডি-তে ল্যাব কর্মীদের প্রশিক্ষণ চলছে।


জানা গেছে, বাংলা ছাড়াও, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, সিকিমের মতো প্রতিবেশী রাজ্য থেকে সন্দেহভাজন জলাতঙ্ক আক্রান্তদের নমুনা এলেও এখানে পরীক্ষা করার ব্যবস্থা থাকছে। 


প্রসঙ্গত, কুকুর, শিয়াল, বিড়াল, বাদুড়, বেজি, বানর ইত্যাদি প্রাণী জলাতঙ্ক সৃষ্টিকারী ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তা মানুষকে কামড়ালে এই রোগ হয়। আমাদের দেশে ৯৫ শতাংশ জলাতঙ্ক রোগ হয় কুকুরের কামড়ে। সাধারণত আক্রান্ত প্রাণী সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ানোর ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে। তবে এ সময়সীমা এক সপ্তাহ থেকে এক বছর পর্যন্তও হতে পারে। 


জলাতঙ্কের জন্য দুই ধরনের টিকা রয়েছে। ক্ষতের তীব্রতা ও আধিক্যের ওপর ভিত্তি করে কারও ক্ষেত্রে এক ধরনের, আবার কারও কারও ক্ষেত্রে উভয় ধরনের টিকা প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে। যত তাড়াতাড়ি জলাতঙ্কের এ টিকা গ্রহণ করা যায়, ততই ভাল।  সাধারণত প্রথম দিন টিকা দেওয়ার পর ৩, ৭, ১৪, ২৮ ও ৯০তম দিনে টিকার মোট ৬টি ডোজ প্রয়োগ করতে হয়।