অনির্বাণ বিশ্বাস , ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : প্রতিবাদে উত্তাল শহর। জেলা থেকে জেলা চলছে বিক্ষোভ। আরজি করের ঘটনা নড়িয়ে দিয়েছে সারা বিশ্বের ভারতীয়দের। কলকাতা এখন প্রতিবাদের শহর। শুক্রবার সারারাত আরজি করের নির্যাতিতার সঠিক বিচারের দাবিতে পথে বসেছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তাঁদের নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল ভোর চারটে অবধি। প্রতিবাদ চলছিল শান্তিপূর্ণ ভাবেই কিন্তু রাত সাড়ে তিনটেয় ঘটল এমন একটি ঘটনা, যাতে করে আন্দোলনের মোড়টাই ঘুরে গেল অন্যদিকে।
আর জি কর-কাণ্ডে বিটি রোডে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও প্রাক্তনীদের প্রতিবাদ চলাকালীন রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ একটি বাইক নিয়ে ঢুকে পড়েন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সেই সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন মত্ত অবস্থায়। তিনি পুলিশ লেখা বাইক নিয়ে প্রতিবাদীদের মধ্যে ঢুকে পড়েন। টালমাটাল অবস্থায় তাঁকে ধরে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা, জানতে চাওয়া হয় তাঁর পরিচয়। জানা যায়, ওই ব্যক্তি সিঁথি থানার সিভিক ভলান্টিয়ার গঙ্গাসাগর গোন্ডে। অভিযোগ তিনি বেসামাল অবস্থায় ছিলেন। প্রতিবাদ মিছিলে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে অশান্তি বাঁধতেই, সেখানে কর্তব্যরত সার্জেন্ট ওই বাইকআরোহী সিভিক ভলান্টিয়ারকে 'সাইডে আসতে বলেন'। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সেখানে কর্তব্যরত সার্জেন্ট তারকেশ্বর পুরীই ওই মত্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করেন। এই ঘটনার পর আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। কেন সব দেখে শুনে, সার্জেন্ট চুপ রইলেন, তাঁকে পালাতে সাহায্য করলেন, প্রশ্ন তুলেছেন পড়ুয়ারা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কাশীপুর ও সিঁথি থানার পুলিশ অফিসাররাও গুরুত্ব দিয়ে পড়ুয়াদের কথা শুনছিলেন না।
আরজি কর কাণ্ডে ধরা পড়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। আবার রবীন্দ্রভারতীর বিক্ষোভেও মত্ত অবস্থায় ঢুকে পড়ার অভিযোগ সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধেই। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এই সিভিক ভলান্টিয়ারকে বাঁচাতেই তৎপর ছিলেন সেখানে উপস্থিত সার্জেন্ট । তাই তাঁদের প্রশ্ন, সিভিক ভলান্টিয়ারদের মাথায় তাহলে কার হাত ? কেন তাঁদের সেফ-গার্ড দিচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা?
শেষমেষ এফআইআর দায়ের করে অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, অবরোধ উঠতেই অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত কাজে যোগ দিতে পারবেন না বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর অবরোধ তোলেন প্রতিবাদীরা। কিন্তু ওই ব্যক্তিকে কেন আন্দোলনকারীদের সামনে আনা হল না, তাই নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বিক্ষোভকারী ছাত্রীরা।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।