সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, সত্যজিৎ বৈদ্য, কলকাতা : রাজস্থানে খুন করে কলকাতায় এসে আত্মগোপন করেছিল গুজরাতের ভাড়াটে খুনিরা। এরপর পুলিশের তাড়া খেয়ে পুলিশ পরিচয়েই সল্টলেকের আবাসনে এসে গা ঢাকা দেওয়ার মতলব ছিল। সিনেমার মতো ধাওয়া করার পর পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তিন খুনে দুষ্কৃতী। সল্টলেকে ভয়ঙ্কর কাণ্ড। 

Continues below advertisement

ঘটনার সূত্রপাত রাজস্থানে। তোলার টাকা দিতে না চাওয়ায় রাজস্থানে জিমে থাকাকালীন পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয় এক ব্যবসায়ীকে। সূত্রের খবর, ব্যবসায়ী রমেশ রুলানিয়ার কাছে তোলা চেয়েছিল গ্যাংস্টার রোহিত গোদারার গ্যাং। ব্যবসায়ী পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার পরেই তাঁর উপর হামলা হয়। সূত্রের খবর, বিদেশে বসেই ব্যবসায়ীকে খুনের ছক কষে রোহিত গোদারা। ৭ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৭টার সময়ে তাঁকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। মুখে গামছা জড়িয়ে জিম থেকে বেরোনোর সময়ে এক দুষ্কৃতীর ছবি ধরা পড়ে সিসি ক্যামেরায়। এই ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেফতার করে রাজস্থান পুলিশ। আরও ৪ জন পলাতক ছিল। এরাই এসে পড়ে কলকাতায়। 

লালবাজার সূত্রে খবর, শুক্রবার সকাল ৭টা নাগাদ ফুলবাগান থানার কাছে খবর আসে, নারকেলডাঙা মেন রোডে ঘোরাঘুরি করছে সন্দেহজনক ৩ যুবক। পুলিশ গিয়ে, স্বভূমির কাছে ওই তিনজনকে আটক করে। পুলিশকর্মীরা জানতে চান, তারা কোথা থেকে এসেছেন, কী কারণে এসেছেন? এক যুবকের উত্তর, গাড়ি কিনতে এসেছি। তখন গাড়ি কেনার নথি দেখতে চান পুলিশকর্মীরা। নথি দেখাতে না পেরে, আর এক যুবক বলে, হুগলি যাব। বৈদ্যনাথ মন্দিরে পুজো দিতে যাব। অসংলগ্ন কথাবর্তা বলায় চেপে ধরেন পুলিশকর্মীরা। এক যুবক তখন, স্বীকার করে নেয়, তারা রাজস্থানে অপরাধ করে পালিয়ে এসেছে। এরই মধ্যে ২ জনকে ধরে ফেলে পুলিশ। বিপদ বুঝতে পেরে ধর্মেন্দ্র গুর্জর ওরফে দেবা দৌড় দেয়। তাড়া করে পুলিশ। পুলিশের তাড়া খেয়ে পূর্বাচল আবাসনে ঢুকে পড়ে সে।  ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন আবাসনের বাসিন্দারা।  ধর্মেন্দ্রকে ধরতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে। বেশ কিছুক্ষণ পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে সে লুকিয়ে থাকে বিল্ডিং-এর কার্নিশে। কার্নিশ থেকে নিকাশি পাইপ বেয়ে নিচে নামে ধর্মেন্দ্র। কিছুক্ষণ হেঁটে যাওয়ার পর, দৌড় লাগায়। সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই ছবি। আবাসন থেকে প্রায় ৮৫০ মিটার দূরে বেঙ্গল টেনিস অ্যাকাডেমির কাছে ধর্মেন্দ্রকে পাকড়াও করে পুলিশ।

Continues below advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর ধৃতরা সকলে গুজরাতের বাসিন্দা। টাকার বিনিময়ে খুন করত। প্রথমে অভিযুক্তদের মাথার দাম ছিল ২৫ হাজার টাকা পরে তা বাড়িয়ে ১লক্ষ টাকা করা হয়। তাদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার দেওয়া হয়। এরপরই কলকাতায় এই ঘটনা। কিন্তু গুজরাতের বাসিন্দা, রাজস্থানে কুকর্ম ঘটিয়ে কলকাতায় এল কেন! তদন্তে পুলিশ। এখনও এক জন অধরা।