কলকাতা : এ যেন এক বিরাট ধ্বংস স্তূপ । ভূস্বর্গের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। রবিবার ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানে ধুয়ে মুছে মাপের যাওয়ার জোগাড় বিরাট এলাকা। চোখের সামনে ভেসে গেল পেল্লায় বাড়ি। তছনছ হল হোটেল , আবাসন। খেলনার মতো ভেসে গেল বড় বড় গাড়ি। রাক্ষুসে গতিতে ধেয়ে এল বান। এখনও পর্যন্ত মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও   ভূমিধসে কমপক্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ধুয়ে মুছে গিয়েছে বহু ঘরবাড়ি, দোকান ও রাস্তাঘাট। জেলা জুড়ে জারি করা হয়েছে জরুরি সতর্কতা । 

রবিবার ভোরে জম্মুর রামবানে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ভয়ঙ্কর ধ্বংসলীলা চালায়। এখনও সেই মুহূর্তের কথা ভেবে শিউরে শিউরে উঠছেন পর্যটকরা। ধ্বংসযজ্ঞের কথা মনে করে কাঁপছে মানুষ। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে রামবানের একটি হোটেলের দুটি তলা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে মেঘ ভাঙা বৃষ্টি। হোটেলে ঘরে ঘরে ছিলেন বহু মানুষ। তাঁরা ভাবতেও পারেনি বাইরে অপেক্ষা করছে মৃত্যুদূত। 

রামবানের সেই হোটেল

জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় মহাসড়কে অবস্থিত হোটেল উসমান ওয়াইস। রামবানের বৃহত্তম হোটেলগুলির মধ্যে একটি।  ছিলেন বহু অতিথি।  রাত তখন তিনটে। ঘুমে অচেতন অতিথিরা। হঠাৎ দরজায় টোকা পড়ে। ধড়মড়ুয়া ওঠেন অতিথিরা। ম্যানেজার এসে বলেন... পালান পালান। বান আসছে।  

হোটেলটির এক তলায় রয়েছে রেস্তোরাঁ, দোকান এবং পার্কিংয়ের ব্যবস্থা । হাইওয়ের পাশে অবস্থিত হওয়ার জন্য এই হোটেলটিতে সবসময়ই বেশ ভিড় থাকে।  রবিবারের দুর্যোগে  সবথেকে বেশি ক্ষতির শিকার এই হয়েছে এই হোটেলই। 

সূত্রের খবর, প্রথমে অতিথিদের সরিয়ে নেওয়া হয়। তারপর কর্মীরা নিজেই পালিয়ে যায়। এই হোটেলের দুটি তলা  ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে গিয়েছে। হোটেলের বাইরে পার্ক করা গাড়িগুলোর কোনও চিহ্ন নেই। সব ভেসে গিয়েছে এক ঝটকায়। 

হোটেল ম্যানেজার এবিপি নিউজকে জানান,  রবিবার  যখন তিনি হড়পা বানের খবর পান, তখন আগে অতিথিদের দরজায় ধাক্কা মেরে জাগান। তাঁদের  হোটেল খালি করতে সাহায্য করেন। তারপর তাঁরাও পালান। হোটেল ম্যানেজার জানান, সব অতিথিদের সরিয়ে নেওয়ার পর, হোটেল কর্মী এবং ম্যানেজারও জীবন বাঁচাতে সক্ষম হন। কিন্তু ম্যানেজার মুস্তাক এখনও বিশ্বাস করতেই পারছেন না, তিনি বেঁচে আছেন।  রবিবার সকালে যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। এক মুহূর্তের জন্য তিনি অনুভব করেছিলেন , তিনি আর বাঁচবেন না। তিনি জানান, হোটেলের সব ঘর নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রথম দুটি তলা। মুস্তাক বলেন ,  "এই ঘটনার ২৪ ঘন্টা পরেও আমরা নিচতলায় পৌঁছাতে পারিনি, কারণ পুরো তলাটিই ধ্বংসস্তূপে পরিণত। হোটেলের অন্য দুটি তলাও ক্ষতি হয়েছে। পরিষ্কারের কাজ চলছে। "