আবির দত্ত, সন্দীপ সরকার ও অর্ণব মুখোপাধ্যায়, রামপুরহাট : সিবিআইয়ের (CBI) ম্যারাথন জেরার মুখে পড়লেন বগটুইকাণ্ডে ধৃত তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেন (TMC Leader Anarul Hossain)। ৮ ঘণ্টা জেরা করা হয় তাঁকে। ধৃত তৃণমূল কর্মী আজাদ চৌধুরীর সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে তাঁকে জেরা করা হয়। জেরার পর রামপুরহাট থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তৃণমূল নেতাকে। ফের জেরার সম্ভাবনা রয়েছে আনারুলকে। এদিকে বগটুই গ্রামে বানিরুল শেখের বাড়ির পিছন থেকে শাবল ও হাঁসুয়া উদ্ধার করে কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক দল।


রামপুরহাটের ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড ! তৃণমূলের উপপ্রধানকে খুনের পরে বগটুইয়ের পশ্চিমপাড়ায় ৮ জনকে জীবন্ত জ্বালিয়ে মারা হয়। সেই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে ধৃত তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনকে প্রথমবার জেরা করল সিবিআই। রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে ম্যারাথন জেরা করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।


রবিবার থেকে বগটুই হত্যাকাণ্ডে বয়ান রেকর্ডের প্রক্রিয়া শুরু করে সিবিআই। রবিবার দুপুর সোওয়া একটা নাগাদ রামপুরহাটে সিবিআইয়ের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় আনারুল হোসেন-সহ ৪ জনকে। সূত্রের খবর, প্রথমে আলাদা করে জেরা করা হয় তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনকে। দফায় দফায় জেরা করা হয় তাঁকে। রামপুরহাট হাসপাতালে আক্রান্তদের বয়ান রেকর্ডের প্রক্রিয়া শেষ করে, দুপুর আড়াইটে নাগাদ ক্যাম্পে পৌঁছন সিবিআইয়ের ডিআইজি অখিলেশ সিং। সূত্রের খবর, তাঁর উপস্থিতিতে আনারুলের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ভাদু শেখ খুনের পর তৃণমূল কর্মী আজাদ চৌধুরীর সঙ্গে ফোনে তাঁর কী কথা হয়েছিল ?


আজাদকে প্রশ্ন করা হয়, কাদের নিয়ে তিনি বগটুই গ্রামে ঢুকেছিলেন ? দু’জনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, পুলিশকে কি তাঁরাই খবর দেন ? পুলিশ কখন পৌঁছেছিল গ্রামে ? সিবিআইয়ের ডিআইজি প্রশ্ন করেন, কারা কারা খুনের ঘটনায় জড়িত ? সূত্রের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন আনারুল। 


এদিকে সাংবাদিকের তরফে আজ আনারুলকে প্রশ্ন করা হয়, আপনাকে কি চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে ? উত্তরে আনারুল বলেন, ষড়যন্ত্র। কিন্তু, কে ষড়যন্ত্র করেছে ? সেটা কি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ? এবার ধৃত তৃণমূল নেতার অভিযোগ, বিরোধী দল আছে। কিছু লোক আছে। 


সিবিআই সূত্রে খবর, টানা চলবে জেরা । অভিযুক্তদের জেরার পাশাপাশি এদিনও বগটুইয়ের পশ্চিমপাড়ায় নমুনা সংগ্রহ করে সিবিআই। বানিরুল শেখের পোড়া বাড়ির পিছনে হাঁসুয়া ও শাবল উদ্ধার হয়! উদ্ধার হয় পুড়ে যাওয়া একটি মোটরবাইক।


হত্যাকাণ্ডে নিহতের আত্মীয় মিহিলাল শেখ বলেন, কেউ তো আর বাড়ির বাইরে অস্ত্র ফেলে রাখে না। সম্ভবত তারা এনেছিল অস্ত্র।


সূত্রের খবর,  উদ্ধার হওয়া ধারাল অস্ত্র কি হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিল? তা জানতে হাঁসুয়া ও শাবলে রক্তের দাগ আছে কি না তা পরীক্ষা করা হবে।