প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া: আজ থেকে শুরু হচ্ছে রাস উৎসব। তাই সাজো সাজো রব নদিয়ার নবদ্বীপ। নবদ্বীপের শ্রেষ্ঠ উৎসব রাস। এই রাস উৎসব উপলক্ষে বৈষ্ণব ধর্মালম্বী মানুষ তো বটেই এছাড়াও বহু দূরদুরান্ত থেকে মানুষ ইতিমধ্যেই নবদ্বীপে এসেছেন রাস দেখতে।  রাসলীলা বা রাস যাত্রা সনাতন ধর্মলম্বীদের একটি বিশেষ উৎসব ।




রাস মূলত, শ্রীকৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাবধারার অনুষ্ঠিত এক ধর্মীয় উৎসব। জনশ্রুতি প্রচলিত আছে যে শ্রীচৈতন্যদেব রাধাকৃষ্ণের রাস উৎসব সূচনা করেছিলেন নদীয়ার নবদ্বীপে। নবদ্বীপ রাসের প্রধান বিশেষত্ব হচ্ছে মূর্তির বিশালতা। অপরূপ মৃন্ময়ী মূর্তি নির্মাণ করে নানা রূপে শক্তি আরাধনায় নবদ্বীপের রাসের প্রধান বৈশিষ্ট্য।




তবে এবছর থিমে ঢাকছে রাশের ঐতিহ্য। চিরাচরিত উচ্চতার ঐতিহ্য ছেড়ে থিমের দিকে ঝুকছে নবদ্বীপ। এক সময়ে রাস মানে ছিল পূর্ণিমার ভরা রাতে বিশুদ্ধ তন্ত্র মন্ত্রে শক্তি মূর্তি সাড়ম্বরে পুজো। কার কত বড় প্রতিমা তা নিয়ে চলত প্রতিযোগিতা। তবে এবছর সেই প্রথা ভেঙে বেরিয়ে এসেছেন নবদ্বীপের একাধিক ক্লাব ও বারোয়ারি পুজো কমিটি।


আরও পড়ুন, ভর সন্ধেয় কসবার TMC কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে লক্ষ্য করে গুলি! অল্পের জন্য রক্ষা


নদিয়া জেলার পাশাপাশি  পূর্ব মেদিনীপুরও প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব পালিত হয় পঁচেটগড় !  প্রতিবারই রাস উৎসবকে ঘিরে মেতে ওঠে গোটা বাংলা। আর রাস উৎসবের কথা বললে পঁচেটগড়ের কথা না বললেই নয়। প্রাচীন বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের থানা এলাকার পঁচেটগড় একটি প্রসিদ্ধ স্থান ।পঁচেটগড় রাস উৎসবের জন্যই সকলের কাছে এক ডাকে পরিচিত। প্রায় ৫০০ বছরের প্রাচীন পঁচেটগড় রাজবাড়ির ঐতিহ্যবাহি এই রাস উৎসব।





ইতিহাস বলছে, একসময় এই রাস উৎসবের জাঁকজমক দুর্গোৎসবের চেয়ে কোনও অংশে কম ছিল না। রাজপরিবারের বর্তমান বংশধরদের দাবি, ওড়িশার কটক জেলার আটঘর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বাড়ির আদি পুরুষ কালুমুরারি মোহন দাস মহাপাত্র। এই দুঃসাহসিক যুবক আকবর বাদশাহের রাজ কর্মচারী ছিলেন। ওড়িশার রাজা মুকুন্দদেব আকবর বাদশাহের সঙ্গে সঙ্গবদ্ধ হয়ে উভয়ের সাধারণ শত্রু গৌড়ের রাজা গৌড়েশ্বর সুলেমন কররানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হয়। এখানে কালুমুরারির অসামান্য কৃতত্ব প্রকাশ পায়। কথিথ আছে, সেই সময় কালুমুরারি পটাশপুর পরগনায় এসে বাদশাহ প্রদত্ত নানকর ভূমি লাভ করে জমিদারি সূচনা করেন। প্রথমে কল্যানপুরে বাস করেন। পরে পঁচেট গ্রামে খাঁড়ে বিশাল গড় নির্মাণ করেন তিনি।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।