অর্ণব মুখোপাধ্যায়, পুরী: জগন্নাথ ধাম ও মহাপ্রসাদ নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক। এই আবহে মন্দির সংক্রান্ত একাধিক শব্দের পেটেন্ট চেয়ে আবেদন করেছে পুরীর মন্দির কর্তৃপক্ষ। জানালেন মন্দিরের মুখ্য প্রশাসক অরবিন্দ পাঁধী। তিনি জানিয়েছেন, জগন্নাথ ধাম একটাই। আর কোথাও তা হতে পারে না। 

রাত পোহালেই ভক্তেরা টান দেবেন রথের দড়িতে। কিন্তু তার অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে পুরী বনাম দিঘা। রথের পথে টান পড়েছে রাজনীতির দডিতে। জগন্নাথদেবকে ঘিরেও শুরু হয়েছে রাজনীতির আমরা-ওরা। শুরু হয়েছে ধাম বিতর্ক। দিঘার জগন্নাথ মন্দির ঘিরে যখন তৃণমূলের প্রচার তুঙ্গে, তখন রথ থেকে উল্টো রথ- একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিজেপি। এই আবহে মন্দির সংক্রান্ত একাধিক শব্দের পেটেন্ট চেয়ে আবেদন করেছে পুরীর মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দিরের মুখ্য প্রশাসক অরবিন্দ পাঁধী জানিয়েছেন, "জগন্নাথ ধাম একটাই। পুরীর মন্দির বা মহাপ্রসাদের মাহাত্ম্যও সবাই জানে। এ নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। তবে এবারে মন্দির সংক্রান্ত শব্দের পেটেন্ট চেয়ে দ্বারস্থ হয়েছে পুরীর জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষ। আমরা ট্রেড মার্ক, ওয়ার্ড মার্ক, সব কিছুর পেটেন্টের জন্য আবেদন করেছি।''

দিঘা-পুরীর প্রসাদ নিয়েও শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী প্রতিযোগিতা। যা নিয়ে রীতিমতো বিরক্ত পুরীর মহারাজ। গজপতি দিব্যসিংহ দেবের কথায়, "মন্দির করেছেন ভাল। জঘন্নাথ ধাম কেন। শ্রীক্ষেত্র ছাড়া ধাম হতে পারে না। ধাম নাম দিলেন, মহাপ্রসাদ দিলেন। সরকারকে বলব আইনের পথে হাঁটতে।'' এনিয়ে পুরীর মন্দির কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি, ওড়িশার বিজেপি সরকারকে পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেন, সব কা সাথ, সব কা বিকাশ। তাহলে আপনি জ্বলছেন কেন? আপনার জ্বলন কেন হচ্ছে? আমি তো পুরীর জগন্নাথ মন্দিরকে সম্মান করি, আপনি দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে সম্মান করুন। যখন পুজো প্রথম হয় তখন রাজেশ দৈতাপতি এখানে ছিলেন। যিনি পুরীর একজন দৈতাপতি।''

এদিকে রথযাত্রা উপলক্ষে সেজে উঠেছে দিঘা। জগন্নাথ মন্দির প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথমবার সৈকত শহরে রথযাত্রা পালিত হবে। শহরজুড়ে সাজো সাজো রব। গত ৩০ এপ্রিল জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিদিনই ভিড় হচ্ছে। রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ভিড় বাড়বে বলে মনে করছে প্রশাসন। সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য ৫ মন্ত্রী, অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু, পুলক রায় স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজেও গতকাল পৌঁছে গেছেন দিঘায়। আজ দুপুরে রথযাত্রার ব্যবস্থাপনা এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে প্রস্তুতি বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। রথযাত্রা উপলক্ষ্যে দিঘায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।