পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের ( Bakibur Rahaman ) সাম্রাজ্য়ের বহর ED আধিকারিকদের অবাক করেছিল আগেই। এবার রেশন দুর্নীতি মামলার ( Ration Distribution Scam ) তল্লাশিতে ED-র হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে বলে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তাদের দাবি, এক অভিযুক্তের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ডায়েরি। আর তা থেকেই পাওয়া গিয়েছে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য । 


ডায়েরিতে লেখা, সরকারি গণবণ্টন ব্যবস্থায় কত পরিমাণ আটা কত দামে কেনা হয়েছে। ED-র দাবি, প্রায় ৮-১০ বছর ধরে চলছিল রেশনের আটা বিক্রির বেআইনি কারবার। বাকিবুরের রাইস মিল থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে বিভিন্ন সরকারি দফতরের ১০৯টি স্ট্যাম্প। এর মধ্যে রয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল এসেনশিয়াল কমোডিটিজ সাপ্লাই কর্পোরেশন লিমিটেড, খাদ্য সরবরাহ দফতরের চিফ ইন্সপেক্টর, সাব ইন্সপেক্টর ও পারচেজ অফিসারের স্ট্যাম্প। ED-র দাবি, রেশন সামগ্রী বিক্রির গোটা কারবার চলত চেন সিস্টেমে। প্রথমে মিল মালিক, এরপর  ডিস্ট্রিবিউটার, ডিলার এবং সবশেষে বিভিন্ন ব্যক্তির হাতে পৌঁছে যেত রেশন সামগ্রী।  


কলকাতা থেকে শুরু করে বেঙ্গালুরুতে হোটেল! রেস্তোরাঁ থেকে পানশালা! গ্যারাজে পর্শে, BMW, জাগুয়ারের মতো বিলাসবহুল গাড়ি! সামনে এসেছে রেশন দুর্নীতিতে ইডির হাতে ধৃত মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমানের বিশাল সম্পত্তি! রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের এত বিশাল পরিমাণ সম্পত্তির উৎস সন্ধানেই এখন মরিয়া এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট! হেফাজতে থাকা বাকিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও বাজেয়াপ্ত নথি পরীক্ষা করে এখন এসব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন ইডির অফিসাররা।   


বাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে রেশনের আটা নিয়ে কালোবাজারির প্রমাণ আগেই এসেছিল পুলিশের হাতে। চাঞ্চল্যকর দাবি করল ED। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, ২০২০-২০২২, এই ৩ বছরে নদিয়ার কোতয়ালি, ধুবুলিয়া, নবদ্বীপ এই ৩টি থানায় মামলা রুজু করে রাজ্য পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রচুর রেশন সামগ্রী। ED-র দাবি, তখনই জানা যায়, রেশনের সামগ্রী খোলা বাজারে পাচার হচ্ছে বাকিবুর রহমানের রাইস মিল থেকে। ED-র দাবি, ৩ বছর ধরে পুলিশি অভিযান, তল্লাশির পরেও ওই একই জায়গায় রমরম করে চলছিল রেশনের কালোবাজারি। ফলে এর পিছনে প্রভাবশালী যোগ ও বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছে ED। 



 বাকিবুর রহমানের বিরুদ্ধে এর আগে ২০২০-র ২২ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা হয় নদিয়ার কোতয়ালি থানায়। সেইসময় তল্লাশিতে ওই এলাকার এক ব্য়বসায়ীর দোকান থেকে ৬২২ কেজি রেশনের আটা বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। ED-র দাবি, সেইসময় তদন্তে জানা যায়, এই আটা এসেছিল বাকিবুর রহমানের রাইস মিল থেকে। ২০২০-২০২২, এই ৩ বছরে খোলা বাজার থেকে ৩ হাজার ৮২১ কেজি আটা বাজেয়াপ্ত করে রাজ্য পুলিশ।