কলকাতা: ব্যাঙ্কশাল কোর্টে শুনানি চলাকালীনই আদালতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এখনও পর্যন্ত যে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, তা খুব মজবুত নয়, মন্তব্য করেন বিচারক। তিনি আরও বলেন, এই মামলায় এখনও বেশকিছু খামতি রয়েছে। ১৪ দিনের হেফাজতের নির্দেশ শুনেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন জ্যোতিপ্রিয়। আদালতের মধ্যেই জ্ঞান ফেরাতে মন্ত্রীর মাথায় জল ঢালেন তাঁর মেয়ে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বিচারক তনুময় কর্মকার  নির্দেশ দেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করবে কমান্ড হাসপাতাল। এর পর বিচারকের চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। বিচারক নির্দেশ দিয়ে বলেন, বাড়ির খাবার পাবেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। পাশাপাশি দিনে এক ঘণ্টা করে আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। 



শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পর এবার রেশন বণ্টন দুর্নীতিকাণ্ডে কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেফতার রাজ্য়ের আরও এক মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সারদাকাণ্ডে লাল ডায়েরির পর এবার রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে মেরুন ডায়েরির হদিশ মিলেছে। আদালতে ইডি দাবি করে রেশন দুর্নীতিতে জড়িত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আদালতে ইডির জানায়, ২৬ অক্টোবর জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ অভিজিৎ দাসের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। অভিজিৎ দাসের বাড়িতে উদ্ধার হয় একটি মেরুন ডায়েরি। মেরুন ডায়েরিতে 'বালুদা' বলে নাম উল্লেখ ছিল। পাশাপাশি রেশন দুর্নীতির তদন্তে ইডির নজরে ৩ ভুয়ো সংস্থাও। ইডি সূত্রে খবর, এই ৩ সংস্থার মাধ্যমে ১২ কোটি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে,
ওই ৩ সংস্থায় ৮ কোটি টাকা জমা পড়েছে। জেরার সময় বাকিবুরের স্বীকারোক্তি, ঋণ হিসেবে টাকা গিয়েছে জ্যোতিপ্রিয়র কাছে। সেই টাকা কোনওদিন ফেরত আসেনি বলেও খবর। 


ইডি সূত্রে খবর, বনমন্ত্রীর আপ্ত সহায়ক অমিত দে এবং রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত ব্য়বসায়ী বাকিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদে একাধিক সূত্র পাওয়া যায়। তা নিয়ে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান প্রাক্তন খাদ্য়মন্ত্রী। এরপরেই গতকাল রাত ১০টায় তাঁকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিকের মোবাইল ফোন। সেটির ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে। সকালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য় প্রাক্তন খাদ্য়মন্ত্রীকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর দুপুর ২টো নাগাদ বনমন্ত্রীকে চিফ মেট্রোপলিট্য়ান্ট ম্য়াজিস্ট্রেটের আদালতে পেশ করা হবে বলে ইডি সূত্রে খবর। এদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ও মানিক ভট্টাচার্যর গ্রেফতারির সময় ইডির আইনজীবী থাকা ফিরোজ এডুলজিকে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটার নিয়োগ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।