কলকাতা: দীর্ঘ দিন নিভৃতে থাকার পর একাবারে নবান্নে হাজির শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee) এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় (Baishakhi Banerjee)। তাতে তাঁদের তৃণমূলে (TMC) প্রত্যাবর্তন ঘিরে যখন জল্পনা তুঙ্গে, সেই সময়ই রত্না চট্টোপাধ্যায়কে (Ratna Chatterjee) নিয়ে প্রকাশ্যে ফের কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বৈশাখী। রত্না তাঁদের কাছে 'অপ্রাসঙ্গিক' বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতেই নতুন করে ত্রয়ীর সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে চুপ থাকেননি রত্না।
শোভন-বৈশাখীর মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া রত্নার
বুধবার আচমকাই নবান্নে (Nabanna) হাজির হন শোভন এবং বৈশাখী। নবান্নের ১৪ তলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেন তাঁরা। সেখান থেকে বেরিয়ে তৃণমূলে ফেরা নিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিতই দেন দু'জনে। কিন্তু রত্নার প্রসঙ্গ উঠতেই কটাক্ষের স্বর শোনা যায় বৈশাখীর গলায়। তাঁদের প্রত্যাবর্তনের পথে বৈশাখী কোনও ভাবে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেন কিনা জানতে চাইলে বৈশাখী বলেন, "মানুষ যাঁকে দেখে তৃণমূল করেন, তাঁর সঙ্গেই দেখা করতে এসেছিলাম আমরা। আপনারা যে নাম নিয়ে আলোচনা করছেন, তিনি আমাদের কাছে ততটা প্রাসঙ্গিক নন।"
মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের পর এ দিন বৈশাখী জানান, অভিমান জমে ছিল। কিন্তু আজ সেই দেওয়ার ভেঙে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে শোভনের উদ্দেশেই বার্তা দেন রত্না। তিনি বলেন, "অভিমান কেন হয়েছিল, কী কারণে হয়েছিল, তা সাধারণ মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব নয়। একমাত্র শোভন চট্টোপাধ্যায়ই জানেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন একজন মানুষ, যিনি ভালও বাসতে পারেন, অত্যন্ত কাছে টানতে পারেন আবার অন্যায় করলে বকাবকিও করতে পারেন। তাতে এত অভিমান হল যে মুখের উপর পদত্যাগপত্র ছুড়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলেন! তিন-সাড়ে তিন বছর রাজনীতি থেকে দূরে রইলেন। তৃণমূল করতে পারবেন না বলে অন্য দলে গেলেন মাঝে। সেখানে মোহভঙ্গ হয়ে এখন আবার ফিরে আসতে চাইছেন। আমার মনে হয় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মতো বুদ্ধইমান রাজনীতিকের পক্ষে এটা বেমানান। ওঁকে জ্ঞান দেওয়ার ক্ষমতা নেই আমার। তবে অভিমান যদি ভেঙে গিয়ে থাকে, তাহলে পরে দিদি বকলেও যেন অভিমান হিসেবে নেন। ছোট ভাই বলেই বকাবকি গ্রহণ করেন।"
শোভন-বৈশাখীর তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনে তাঁর কি কোনও আপত্তি রয়েছে! রত্নার সাফ জবাব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেন। তার ঊর্ধ্বে কিছু নেই দলে।
বৈশাখীর এই মন্তব্য নিয়েই এবিপি আনন্দে মুখ খোলেন রত্না। তিনি বলেন, "আমি প্রাসঙ্গিক কিনা, সেটা যখন কোনও ব্যাপারই নয়, তাহলে আগে তো বলার দরকারই ছিল না যে, 'রত্না চট্টোপাধ্যায় যে দলে থাকবেন, সেই দল করব না, রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক মঞ্চে থাকার প্রশ্ন নেই'!"
শোভনের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে
রত্নাকে নিয়ে বৈশাখীর মন্তব্য বা শোভন-বৈশাখীর তৃণমূলে ফেরা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রত্নার বাবা তথা তৃণমূল নেতা দুলাল দাস। ফোনে তিনি বলেন, "ওদের ব্যাপারে কোনও কথা বলতে চাই না আমি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন। তিনি যেটা ভাল মনে করেন করবেন। কিন্তু যে নামগুলি নিয়ে আলোচনা করছেন, তাদের নিয়ে কথা বলতে চাই না।"