সুদীপ্ত আচার্য ও প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) একের পর এক নাম উঠে আসছিল। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, কুন্তল ঘোষের সঙ্গেই নাম উঠে এসেছিল গোপাল দলপতির। কিন্তু তারপরেই তাঁর খোঁজ মিলছিল না। পরে গোপাল নিজেই ইডির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপরে মঙ্গলবার প্রায় ১৩ ঘণ্টা ধরে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ঘোপাল দলপতি ও তাপস মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করল ইডি।
মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি-র (ED) দফতরে আসেন গোপাল ও তাপস। রাত ১টা ২০ নাগাদ দু’জনে বের হন। মঙ্গলবার নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত যুব তৃণমূলের রাজ্য় সম্পাদক কুন্তল ঘোষের মুখোমুখি বসিয়ে গোপাল দলপতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি-র আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন একাধিকবার কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন কুন্তল ও গোপাল। কুন্তল ১৫ কোটি টাকা দেওয়ার দাবি করলেও, গোপাল তা অস্বীকার করেন। উল্টে জানতে চান কার সামনে টাকা দিয়েছেন কুন্তল? তার কোনও প্রমাণ রয়েছে কি না।
অভিযোগ অস্বীকার গোপালের:
জিজ্ঞাসাবাদের পর গোপাল দাবি করেন, তাপস মণ্ডলের সূত্রে যুব তৃণমূল নেতার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হলেও, কুন্তলের ১৫ কোটি টাকার অভিযোগ সম্পর্কে কিছুই জানা নেই। নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানো আরেক যুব তৃণমূল নেতা ও হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেন গোপাল। পাশাপাশি, ইডি-র তরফে ৭ দিনের মধ্যে তাঁকে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট, সম্পত্তি সংক্রান্ত নথি ও পুরনো মামলার সমস্ত তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানান গোপাল দলপতি। অন্যদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল গতকাল ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের পর দাবি করেন, গোপাল দলপতি তাঁর গ্রামের ছেলে। কিন্তু ৪ বছর পর দেখা হয়েছে। তিহাড় জেল থেকে গোপালের ছাড়া পাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাছ থেকে জেনে তিনিই পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরের কসবা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে গোপালকে খুঁজে নিয়ে আসেন বলে দাবি করেন তাপস মণ্ডল।
ফের শান্তনুকে তলব:
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থবার তলব করেছে ইডি। ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট ও সম্পত্তি সংক্রান্ত নথি নিয়ে বুধবারই হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। এর আগে শান্তনুর বলাগড়ের বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড, শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, তাপস মণ্ডল ও কুন্তল ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে একাধিক তথ্য তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। সেই সূত্রেই যুব তৃণমূল নেতাকে ফের তলব করেছে ইডি।
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যুব তৃণমূল নেতাকে চতুর্থবার তলব ইডির