কলকাতা: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে এসএসসি ইস্যুতে পুলিশের লাঠিচার্জে গঙ্গায় অনেক জল জল বয়ে গিয়েছে। চাকরিহারা শিক্ষকদের বিকাশভবন অভিযান ঘিরে যে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ে এদিন রাজ্য পুলিশের তরফে, আন্দোলনকারীদেরকেই মূলত 'দায়ী' করা হয়েছে। এমত অবস্থায় চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকাদের অবস্থান মঞ্চে পৌঁছে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি সেখানে শুভেন্দুর সঙ্গে উপস্থিত হয়েছেন বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী এবং সজল ঘোষ।
আরও পড়ুন, প্রথম বেআইনি কাজটা আন্দোলনকারীদের তরফেই হয়েছে, সব্যসাচী দত্ত ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া পুলিশের
গতকাল এই বিকাশভবনের সামনেই হকের চাকরি চাইতে গিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জে রক্তাক্ত হয়ে হয়েছিল বলে অভিযোগ। পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হন শিক্ষক শিক্ষিকারা বলে অভিযোগ। যদিও এদিন সল্টলেকে বিকাশ ভবনের সামনে লাঠিচার্জ নিয়ে, ADG দক্ষিণবঙ্গ-এর দাবি, 'বিকাশ ভবনের কর্মীদের বার করার জন্য ন্যূনতম বলপ্রয়োগ করা হয়েছে। রাস্তা করার জন্য যে বাধা পেয়েছে, তার জন্য যতটুকু করার করা হয়েছে। ওরা বলছে পুলিশের উপর হামলা হয়নি, আমাদের কাছে হামলার ফুটেজ আছে।পুলিশ ধৈর্য ধরেছে। সংযত থেকেছে। বলপ্রয়োগ করতে চাইলে গেট ভাঙার সময়ই হত। কাউকে নিরাপদে বেরোনোর ব্যবস্থা করাও পুলিশের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যারা এই বিশৃঙ্খলায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে, পুলিশকে মেরেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।'
ADG দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার বলেন,ভিতরে অনেকে অসুস্থ ছিলেন। বয়স্ক মানুষ ছিলেন। মহিলা ছিলেন। তাঁরা বলতে থাকেন যে, আমাদের বের হতে দিন। একজন সন্তান সম্ভবা মহিলা ছিলেন। অসুস্থ বোধ করছিলেন। তিনি বাড়ি যেতে চাইছিলেন। এক তরুণী, তাঁর মায়ের শারীরিক অবস্থা, অত্যন্ত গুরুতর, তিনি বলেছিলেন ওষুধ দিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে, আমাকে বেরনোর ব্যবস্থা করা দিন। আমরা যতবার চেষ্টা করেছি, ততবার প্রতিরোধ এবং উশৃঙ্খল বাধা এসেছে, বারবার আটকে দেওয়া হয়েছে যে, কাউকে বেরোতে দেওয়া হবে না।'
তিনি আরও বলেন, 'মাইকিং করে তারপর আমরা চেষ্টা করি, পুলিশ দিয়ে রাস্তার অর্ধেকটা, সেটাকে ভাগ করে দিই। যাতে তাঁরা বেরোতে পারেন। যখন সেই বেরোনোর চেষ্টাটা হচ্ছিল, নিরাপদে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল বাড়িতে, তখন পুলিশের উপর চড়াও হয় আন্দোলনকারীদের একাংশ। যারা বের হচ্ছিলেন, তাঁদের ধাক্কাধাক্কি করা হয়। প্রচুর ক্যামেরা ছিল। পুরোাটাই লিপিবদ্ধ আছে। রেকর্ডেড আছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন হলে, সেই অধিকার সকলের আছে। কিন্তু সেই অধিকার, প্রয়োগ করতে গিয়ে, যদি সরকারি অফিসের গেট ভেঙে ফেলা হয়, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করা হয়, ৭ ঘণ্টা ধরে, পুলিশের হাজার অনুরোধ, কর্ণপাত না করে, অবস্থান চালিয়ে যাওয়া হয়। এবং বিনাদোষে, ৫০০-৬০০ অসুস্থ মানুষকে যারা বাড়ি ফিরবেন, তাঁদের যদি আটকে রাখা হয় এভাবে, তাহলে এই আন্দোলন গণতান্ত্রিকও থাকে না, শান্তিপূর্ণও থাকে না।'