কলকাতা : অবশেষে রাজ্য অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতির পদ থেকে সরানো হল সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে (Subiresh Bhattacharya)। সূত্রের খবর, তাঁর জায়গায় আসছেন এজেসি বোস কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে (Recruitment Scam Case) গ্রেফতারির ৫ মাস পর রাজ্য অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতির পদ থেকে তাঁকে সরানো হল। এর আগে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (North Bengal University) উপাচার্য পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয় সুবীরেশকে।


২০১৭ থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি পদে ছিলেন সুবীরেশ। দু'বছর অন্তর কমিটির নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলে, কীভাবে দীর্ঘ ছ'বছর ধরে সুবীরেশ এই পদে ছিলেন, তা নিয়ে পরিষদের মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এরইমধ্যে, রবিবার, অধ্যক্ষ পরিষদের বৈঠকে সুবীর ভট্টাচার্যকে সরিয়ে, সর্বসম্মতিক্রমে নতুন সভাপতি করা হল, এজিসি বোস কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতিকে।


স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর CBI-এর হাতে গ্রেফতার হন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। গ্রেফতারির পর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং হিলস ইউনিভার্সিটির উপাচার্যর পদ থেকে সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়। একদা শ্যামাপ্রসাদ কলেজ থেকে লিয়েন নেওয়া অধ্যক্ষ সুবীরেশ। 


মাথা কে ?


দিনকয়েক আগে আদালতে শুনানি চলাকালীন ২০১৬'র গ্রুপ D'র OMR শিট দুর্নীতি মামলায় এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। বিচারপতি জানতে চান, কার নির্দেশে এত বড় নিয়োগ দুর্নীতি ? মাথা কে ? জানাতে হবে সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে। নাম না বলা অবধি ডক্টরেট ডিগ্রি ব্য়বহার করতে পারবেন না।


এদিকে SSC'র তরফে হলফনামায় জানানো হয়, গ্রুপ ডির পরীক্ষায় ২ হাজার ৮২৩টি OMR শিট বিকৃত করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১ হাজার ৯১১ জনকে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে। এরপরই, কমিশনের কাছে বিচারপতি জানতে চান, যখন ২০১৬-র গ্রুপ ডি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়, তখন চেয়ারম্য়ান কে ছিলেন ? উত্তরে কমিশন জানায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য।


এরপর বিচারপতি বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশ ছাড়া কমিশনের সার্ভারে তথ্য বিকৃত হয়ে থাকতে পারে না। সুবীরেশের প্রত্যক্ষ যোগ ছা়ড়া নম্বর বিকৃত করা সম্ভব নয়। কিন্তু সুবীরেশকে জানাতে হবে এত বড় দুর্নীতি কার নির্দেশে। তিনি যদি নাম জানাতে না চান, তাহলে ধরে নিতে হবে, তিনিই এই দুর্নীতির মাথা। এরপরই বিচারপতির হুঁশিয়ারি, সুবীরেশ যদি নাম না জানান, তাহলে, নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও ডক্টরেট ডিগ্রি ব্যবহার করতে পারবেন না। যদি উনি পারিবারিক নিরাপত্তার কথা ভাবেন, সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে পরিবারকে CRPF নিরাপত্তা দেওয়া হবে। 


আরও পড়ুন ; তদন্তে সহযোগিতা করছেন না সুবীরেশ, আদালতে দাবি সিবিআইয়ের