অনির্বাণ বিশ্বাস, মুর্শিদাবাদ: অবশেষে পুকুর ছেঁচে উদ্ধার জীবনকৃষ্ণর একটি মোবাইল ফোন। আরও একটি ফোনের খোঁজে চলছে তল্লাশি। ৩৩ ঘণ্টা ধরে পুকুর থেকে জল তোলার পর উদ্ধার তৃণমূল বিধায়কের মোবাইল ফোন। শুক্রবার বিকেল ৫টায় পুকুরে মোবাইল ফোন ছুড়ে ফেলেন জীবনকৃষ্ণ, দাবি সিবিআইয়ের। নিজের বাড়িতেই নজরবন্দি বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা।


বিবৃতি দিয়ে সিবিআই দাবি করেছে, 'জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ির পাশের জঙ্গল থেকে উদ্ধার নিয়োগ-দুর্নীতির নথি সহ ৫টি ব্যাগ, ব্যাগ থেকে উদ্ধার নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত নথি, চাকরিপ্রার্থীদের ছবি-সহ তালিকা উদ্ধার, মিলেছে চাকরিপ্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড। কার থেকে কত টাকা, ব্যাগে মিলেছে সেই সংক্রান্ত হিসেবের তালিকা। সিবিআই হানার খবর পেয়ে আগেভাগে নথি লোপাটের চেষ্টা জীবনকৃষ্ণর।' কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, 'কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি হয়েছে, মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতেন জীবনকৃষ্ণ, গোপাল, বিভাসরা। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর ও কলকাতার ৬ জায়গায় তল্লাশি। অভিযুক্তরা ২০১৬-র প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ।'


নজরবন্দি বিধায়ক:
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার আন্দির বাড়িতে নজরবন্দি তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। আজ ভোর সোয়া ৪টে নাগাদ সিবিআইয়ের আরও একটি দল পৌঁছয় তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে। সিবিআই সূত্রে খবর, গতকাল জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন বিকেল ৫টা নাগাদ নিজের দুটি মোবাইল ফোন বাড়ির পুকুরে ফেলে দেন জীবনকৃষ্ণ। শ্যালো পাম্প এনে রাত সাড়ে ১০টা থেকে পুকুর ছেঁচে জোড়া ফোনের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। সকালে আরও দুটি পাম্প এনে জল তোলার কাজ চলছে। সকালে বিধায়ককে নিয়ে গতকাল তাঁর বাড়ির আমবাগানেও তল্লাশি চালান সিবিআই আধিকারিকরা। মোবাইলের হদিশ পেতে সকাল সোয়া ৮টায় আনা হয় কমপ্যাক্ট স্ক্যান ডিভাইস। সকাল সোয়া ৯টা নাগাদ পুকুরে নেমে তল্লাশি শুরু করেন পাম্প কর্মীরা। এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর বিধায়কের বাড়ি থেকে নিয়োগ দুর্নীতি ও জমি সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি মিলেছে। 


সিবিআইয়ের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বিভিন্ন জনের মুখে উঠে এসেছে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার নাম। সেই সূত্রে গতকাল বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ দুটি গাড়িতে বিধায়কের আন্দির বাড়িতে পৌঁছয় সিবিআইয়ের ৬ জনের দল, সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী। একইসঙ্গে রঘুনাথগঞ্জে বিধায়কের শ্বশুরবাড়িতেও হানা দেয় সিবিআই। শ্বশুরবাড়িতে তল্লাশি অভিযান দুপুর আড়াইটে নাগাদ শেষ হলেও, বিধায়কের বাড়িতে রাতভর ম্যারাথন তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শুধু টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়া নয়, চাকরিপ্রার্থীদের নামও সুপারিশ করতেন তিনি। বিধায়কের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগও উঠেছে।

আরও পড়ুন: নববর্ষে সরকারি কর্মীদের মমতার শুভেচ্ছাবার্তা, মেসেজ প্রত্যাখ্যান আন্দোলনকারীদের