সুকান্ত মজুমদার, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, রঞ্জিত সাউ, কলকাতা : ১০ জন এজেন্টের মাধ্যমে ১৬ কোটি টাকা তুলেছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ( Recruitment Scam ) ধৃত কুন্তল ঘোষ ( Kuntal Ghosh ) ! সেই টাকা প্রথমে যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের কাছে গেলেও, পরে তার একটা ভাগ যায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ( Partha Chatterjee )  কাছে। শুক্রবার একেবারে আদালতে দাঁড়িয়ে, এমনই বিস্ফোরক দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এদিন ইডির বিশেষ আদালতে তোলা হয়, কুন্তল ঘোষকে। ইডির ( ED )  আইনজীবী দাবি করেন, ১০ জন এজেন্টের বয়ান নেওয়া হয়েছে।

তাঁরা জানিয়েছেন, ২০০ জন প্রার্থীর থেকে টাকা তুলে দিয়েছেন কুন্তল ঘোষকে। মোট ১৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। 
২০০ জন প্রার্থীর প্রত্য়েকের থেকে ৮ লক্ষ টাকা নেন কুন্তল ঘোষ। ইডির আইনজীবীর দাবি, এই টাকার একটা ভাগ গেছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। 

'১৬ কোটি টাকা তুলেছিলেন কুন্তল, টাকার ভাগ গেছিল পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের কাছে' আদালতে দাবি ED'র। শুক্রবার কুন্তলের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবী বলেন, ' বিএড, ডিএল এড কলেজের অনুমোদনের জন্যও টাকা নেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্যর প্রভাবকে কাজে লাগানো হয়েছে।

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতার করা হলেও, আপার প্রাইমারি, নবম-দশমে নিয়োগের ক্ষেত্রেও টাকা তুলেছিল কুন্তল ঘোষ। ইডির আইনজীবী বলেন, তাঁর একটি অ্যাকাউন্টে যে সাড়ে ৬ কোটি টাকা পাওয়া গেছে, সেটার উৎস নিয়েও কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি কুন্তল ঘোষ।

একথা শুনে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান বিচারক। অন্য়দিকে, কুন্তল ঘোষের আইনজীবী সওয়াল করেন, ইডি আজ পর্যন্ত কুন্তলের বাড়ি থেকে একটা টাকাও উদ্ধার করতে পারেনি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কুন্তলের কী যোগ রয়েছে, সেটাও এখনও স্পষ্ট করে বলতে পারেনি ইডি।

কুন্তল ঘোষের বিএড কলেজ আছে, ব্যবসা রয়েছে। সেগুলোই তাঁর সোর্স অফ ইনকাম। এক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি হলে সেটা আয়কর দফতরের আওতায় পড়বে। ইডির নয়। এদিন তদন্তকারী অফিসারের থেকে কেস ডায়েরি চান বিচারক। সেটি খতিয়ে দেখে, কুন্তল ঘোষকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

এদিন আদালতে ঢোকার সময় খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন কুন্তল ঘোষ। বিচারক এ নিয়ে প্রশ্ন করায় তিনি জানান, বৃহস্পতিবার তাঁর ১০৪ জ্বর ছিল। শৌচালয়ে যেতে গিয়ে পড়ে গেছেন।