কলকাতা: শুধু স্কুল নয়, দেদার চাকরি 'বিক্রি' হয়েছে পুরসভাতেও। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তেই উঠে এসেছিল এমন তথ্য। উদ্ধার হয়েছিল নথি, ওএমআর শিট। তার পরেই পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টে সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশই বহাল রাখল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চও। একদিকে এই তদন্ত নিয়ে যেমন আদালতে আইনি লড়াই চলেছে, তেমনই এতদিনের তদন্তে উঠে এসেছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। 


কোন দামে কোন পদ বিক্রি:
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, পুরসভার দেদার চাকরি বিক্রি হয়েছে। পুরসভার কোন পদে চাকরি তার উপর নির্ভর করত কত লক্ষ টাকায় বিক্রি হবে ওই চাকরি। সূত্রের খবর, ওই রেট চার্ট অনুযায়ী


পুরসভায় শ্রমিকের চাকরির দাম ন্যূনতম ৪ লক্ষ টাকা
পুরসভায় গাড়ির চালকের চাকরির দাম ন্যূনতম ৪ লক্ষ টাকা 
পুরসভার সাফাইকর্মীর চাকরির দাম ন্যূনতম ৪ লক্ষ টাকা
পুরসভার গ্রুপ ডি-র চাকরির দাম ন্যূনতম ৪ লক্ষ টাকা
পুরসভার গ্রুপ সি-র চাকরির দাম ন্যূনতম ৭ লক্ষ টাকা 
পুরসভার টাইপিস্টের চাকরির দাম ৭ লক্ষ টাকা থেকে শুরু


গত ২১ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, পুরসভার নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে প্রয়োজনে নতুন FIR দায়ের করে তদন্ত করতে পারবে সিবিআই। সিবিআইকে সব রকম সহযোগিতা করতে হবে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে।


১২ মে পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের রায় বহাল রাখে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া CBI তদন্তের রায় বদলাননি বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। বিচারপতি অমৃতা সিন্হার তাঁর পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রির চক্রের সঙ্গে যারা যুক্ত, সেই অপরাধীদের ধরে, যাতে দ্রুত তদন্ত শেষ করা যায়, সেজন্য রাজ্য সরকারের উচিত তদন্তকারী সংস্থাকে (CBI) সাহায্য করা। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর যাতে দুর্নীতিমুক্ত হয়, সে জন্য রাজ্য সরকারের উচিত এই তদন্তে সহযোগিতা করা।


সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল:
পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখল হাইকোর্টের অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চ। সিবিআই তদন্ত চলবে, জানাল বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং বিচারপতি অপূর্ব সিন্হা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৬ জুন। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং বিচারপতি অপূর্ব সিন্হা রায়ের পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য। পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে আগের নির্দেশ বহাল রাখেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। 


আরও পড়ুন: আপনিও স্বাক্ষরের সময় এমন ভুল করেন, সাবধান, জেনে নিন সঠিক উপায়?