কলকাতা: দেশের পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে (Assembly Election Results 2022) চূড়ান্ত ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের (Congress)। কোনও রাজ্যেই লড়াইটুকু করতে পারেনি শতাব্দী প্রাচীন দল।  গোয়াতে কংগ্রেস কোনওভাবেই ধাক্কা দিতে পারেনি বিজেপিকে। রাজ্যে আরও একবার বিজেপি সরকার গড়তে চলেছে। মণিপুরেও তথৈবচ। গত বিধানসভা নির্বাচনে ২৮ আসন পেয়েও সরকার গড়তে পারেনি কংগ্রেস। এবার মণিপুর নির্বাচনে কংগ্রেসের আসন তলানিতে নেমে গিয়েছে। উত্তরাখণ্ডেও বিজেপির কাছে পর্যুদস্ত হতে হয়েছে কংগ্রেসকে। পঞ্জাবে আম আদমি পার্টির কাছে ক্ষমতা খুইয়ে রীতিমতো হীনবল হয়ে পড়েছে কংগ্রেস।  পাঁচ রাজ্যের এই বিধানসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  তিনি বলেছেন,  ‘কংগ্রেস হেরেই চলেছে। তাই বিজেপির মোকাবিলায় এখন সব আঞ্চলিক দলগুলিকে একজোট হতে হবে।’


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,  ৪ রাজ্যে জিতে ডুগডুগি বাজাচ্ছে বিজেপি, ২০২৪-এ কী হবে কেউ জানে না।


গতকাল পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, "দুর্ভাগ্যজনকভাবে শেষ হয়ে গেছে কংগ্রেসটা। এত পুরনো একটা দল আস্তে আস্তে বিলুপ্তির পথে। কংগ্রেসের উচিত হচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যাওয়া। তাহলে গাঁধীবাদ-সুভাষবাদকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় স্তরে আন্দোলন করা যাবে।"


ফিরহাদ আরও বলেছিলেন যে, এই ফলাফল থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে কংগ্রেস এখন মাত্র দুটি রাজ্যের সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যর্থ হয়েছে কংগ্রেস। উল্টোদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস দেখিয়ে দিয়েছে যে, কীভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয় এবং তাদের হারাতে হয়। 
গতকাল পাঁচ রাজ্যের ফলাফলে পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে শোনা গিয়েছিল  আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ। তিনি বলেছিলেন, এই ভোটের ফলাফল ২০২৪-র নির্বাচনে কী হবে, তা স্থির করে দিল। 


প্রধানমন্ত্রীর সেই দাবিকে কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন কটাক্ষ করে বলেছেন,    ‘কয়েকটা রাজ্যে জিতে লাফাচ্ছে, ২০২৪-এর জন্য লাফাচ্ছে। ২০২৪ সালে কী হবে কেউ জানে না।’


এর পাশাপাশি কংগ্রেসকে আক্রমণ করে আঞ্চলিক দলগুলির জোট বাঁধার আর্জি শোনা গেল তাঁর মুখে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বিজেপি বিরোধী দলগুলি সবাই এক হোক, আমাকে বাদ দিলেও ক্ষতি নেই।  বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যগুলিতে যে দল শক্তিশালী তাকেই ভোট দিক মানুষ।’


তিনি বলেছেন, এক্ষেত্রে কংগ্রেস সহায়ক ভূমিকা নিতে পারে।কংগ্রেস চাইলে আমরা সবাই একসঙ্গে লড়তে পারি।  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদবকে কংগ্রেস, মায়াবতীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। এই জন্য বিরোধী ভোট ভাগ হয়ে গেছে। বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ার সুবিধা পেয়েছে বিজেপি। ’  তিনি বলেছেন, সমাজবাদী পার্টির ইতিবাচক থাকা উচিত। কারণ, এই ফল ভবিষ্যতে বিজেপির পক্ষে বড় লোকসান হয়ে উঠবে। 


গোয়ার রাজনীতিতে পা রেখে সাফল্য় কিছু আসেনি তৃণমূলের। তবে  প্রথমবার লড়ে প্রায় ছয় শতাংশ ভোট পেয়েছে তৃণমূল। এব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,  ‘গোয়ায় তৃণমূল ৩ মাসের মধ্যে ৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে তৃণমূল।’


গোয়ায় তৃণমূল কোনও আসন না পেলেও তাদের জোটসঙ্গী মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি তিনটি আসন পেয়েছে। তারা রাজ্যে বিজেপি সরকারকে সমর্থনের কথা জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,  ‘এটা মানুষের জন্য জোট ছিল, জোটসঙ্গী দল কী করবে তা তাদের সিদ্ধান্ত। আমরা তার বিরোধিতা করছি।’