ঝিলম করঞ্জাই,কলকাতা: রেজিস্ট্রেশন নম্বর (registration number) ভুয়ো, তাও দিব্যি মৃতার ডেথ সার্টিফিকেট (death certificate) লিখে দিলেন 'ডাক্তার' (doctor)। পরে নিমতলা মহাশ্মশানে (nimtala crematorium) দেহ দাহ করাতে এসে বিষয়টি ধরা পড়ে। রোগী পরিজন থ। কী করে ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে 'ডাক্তারি' করছিলেন ওই ব্যক্তি? প্রশ্ন তাঁদের।
কী হয়েছিল?
কেষ্টপুরের বাসিন্দা বন্দনা রায় বেশ কিছু দিন ধরেই ক্যানসারে ভুগছিলেন। হালে ৬১ বছরের ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। 'ডেথ সার্টিফিকেট'-র জন্য তখনই বি মাইতি নামে এক 'চিকিৎসক'কে বাড়িতে ডেকে আনা হয়। তিনি সার্টিফিকেট লিখেও দেন। এর পর দেহ দাহ করতে নিমতলা মহাশ্মশানে নিয়ে আসেন মৃতের পরিজনেরা। তখনই গণ্ডগোল। নিমতলা মহাশ্মশান কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়, রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি সম্ভবত ভুয়ো। তাঁরা খোঁজখবর নেন। দেখেন, সন্দেহ সত্যি। বন্দরা রায়ের পরিজনদের বিষয়টি জানানো হলে আকাশ থেকে পড়েন তাঁরা। এ কী করে সম্ভব? মৃতার আত্মীয় মৃন্ময় চক্রবর্তীর দাবি,'শুধু ডেথ সার্টিফিকেট লেখা নয়, দু-এক বার ওই চিকিৎসককে এমনিও দেখানো হয়েছিল। সাধারণ রোগভোগের ক্ষেত্রেই পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল ওঁর।' বন্দনার ক্যানসার ধরা পড়ার পর বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে পড়ায় তাঁকে বাড়িতে এনে রাখা হয়। সাপোর্টিভ ট্রিটমেন্ট দেওয়া হচ্ছিল। পরিস্থিতির হঠাৎ অবনতি হওয়ায় ওই চিকিৎসককে দেখানো হয়, দাবি পরিজনদের। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর মৃত্যুর পরও বি মাইতিকেই খবর দেওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে এত বড় বিষয় দাঁড়াবে ভাবতে পারেননি কেউ।
অবশেষে কী?
শেষমেশ নিমতলা থানার আইসি ও মহাশ্মশান কর্তৃপক্ষের সাহায্যে দেহ দাহের আগের সমস্ত ব্যবস্থা হয়। আসেন অন্য এক জন চিকিৎসক। তিনিই সমস্ত প্রক্রিয়া করেন। তবে ভবিষ্যতে এই ধরনের ভুয়ো রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহারকারীর খপ্পরে যাতে আর কাউকে পড়তে না হয়, সে জন্য নিমতলা থানার আইসি সমস্ত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট থানাকে ফরোয়ার্ড করে দিয়েছেন। তাঁর আশা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হবে। প্রিয়জন বিয়োগের শোকের মুহূর্তে আর কাউকে এই ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হবে না, বিশ্বাস তাঁদের। যদিও শোনা যাচ্ছে অভিযুক্ত চিকিৎসক দাবি করেছেন, তাঁর রেজিস্ট্রেশন সঠিক।
আরও পড়ুন:রাজ্য পরিবহণে এবার চালু হচ্ছে, ‘ওয়ান স্টেট ওয়ান কার্ড’ পদ্ধতি